অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সত্যজিত রায় -
জীবন্ত লাশ

মানুষের যখন বেঁচে থাকার ইচ্ছাটা সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যায়, মৃত্যুর হাতছানি তার কাছে শরতের শিশিরের মতো। রোদ উঠলেই ফুরিয়ে যায়। মানুষের মৃত্যু হয় একবার, কিন্তু জীবন্ত লাশের মৃত্যু হয় প্রতিক্ষণে, অদেখা কালকূটের তীব্র জ্বালায়।

বাইরের মানুষরা সেটা বুঝতে পারে না। তারা শুধু জীবন্ত লাশ দ্বারা করা অন্যায়গুলি মনে রাখে। তারা শুধু সেটাই দেখতে পায় যেটা তারা আসলে দেখতে চায়।

এরা বোঝে না এই জীবন্ত লাশগুলিও প্রতিনিয়ত মরতে মরতে আবার এক নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখে। আবার একবার বাঁচতে চায়। তাদের মনেও আবার সাধ জাগে। দোলা দেয় নতুন আগামীর এক স্বপ্ন।

কিন্তু সমাজ বারংবার বুঝিয়ে দেয় স্বপ্ন ও বাস্তবতার মাঝের অন্তরটা। পাঠ্যপুস্তকেই শুধু পাওয়া যায় যে, পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর। কিন্তু বাস্তবতা এই যে সবাই পাপীকেই মনে রাখে। আর পাপীর সাথে তার অতীত তথা, পাপগুলিও।

তার হাজার আকুতি নাম পায় অভিনয়ের। তাদের মুখে দেখা যায়, সেই পাপীর অতীতকালীন পাশবিক হাসি। পাপী থেকে  পদোন্নতি হয় আর নাম পায় সেরা অভিনেতার।

হায়রে জীবন। ভুল করলে সেটা সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। একটা সময় সেই জীবন্ত লাশের গল্প শীতের তীব্র কুয়াশায় সোডিয়াম বাতির মতো ফ্যাকাশে হয়ে একেবারে মুছে যায়।

হয়ে যায় তখন এক কাল্পনিক হিরো। মানুষটা এতটাও খারাপ ছিল না।

Read Previous

সুন্দরের ছায়াপাতে অক্ষরের অজুহাত

Read Next

ফালতু লোকের প্রতি ভাবনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *