
গন্ধ সবারই আছে, আলাদা আলাদা।
অন্যরকম ভীষণ!
বলা ভালো, এক এক রকম।
স্বর্ণাভ কেশরের সিংহ থেকে চিতার শরীরে ভিন্ন কিছু।
মা ও বাবা, ফুল আর পাখি, নদী ও সাগর কিংবা ঝর্ণা–
ঘ্রাণেন্দ্রিয় অনায়াসে চিহ্নিত করতে পারে নির্ভুল।
ধুলোয় মাখা খেরোখাতা, সদ্য কেনা রঙিন মলাটবন্দী বই,
পুরনো প্রেমের চিঠি, ভোরের সংবাদপত্র- বন্ধ চোখেই
সম্ভব বলে দেয়া নাম-ধাম, আরও যা কিছু প্রয়োজনীয় বৃত্তান্ত।
পাঁচ কোটি বছরেরও অধিক কাল ধরে টিকে থাকা আরশোলা
থেকে ধারালো দাঁতের ইঁদুরও চিনে নেয়া যায় মুহূর্তে
গভীর শ্বাস নিয়ে
জীবিত কি মৃত, মর্গ বা উদ্যান, কফিনে শোয়ানো নিথর শরীর
বা চলে ফিরে বেড়ানো জীবন্মৃতের ভিন্ন ভিন্ন ঘ্রাণ,
অন্যরকম ভীষণ সধবার সহবাসের সুবাস থেকে বৈধব্যের অন্তর্জালার সুতীব্র দহন।
আকাঙ্ক্ষা ভিজে ভিজে যে দুঃস্বপ্ন, তারও কি নেই একান্ত স্বতন্ত্র বাস?
খুনীরও কিন্তু পৃথক গায়ের গন্ধ-অনেকটা দূর থেকেই আভাস মেলে ঠিকঠাক।
তথাপি নিশ্চুপ থাকি ধারালো ছুরির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েও যেহেতু
হন্তারক আগন্তুক কেউ নয়; বরং খুব বেশি পরিচিত মায়া ভরা মুখ তার,
যে মানচিত্রের প্রতিটি রেখায় এই আমারই তুলির সময় নির্বাচিত সুস্পষ্ট আঁচড়।