অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
জুলাই ৩, ২০২৫
১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
জুলাই ৩, ২০২৫
১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিনয় কর্মকারের গুচ্ছ কবিতা

নারী

গঙ্গাজলের পবিত্রতায় প্রশ্ন রেখে উজিয়ে যায় সীতার অগ্নিপরীক্ষা দিন—

গভীর রাত কাঁধে নিয়ে আজও ঠায় দাঁড়িয়ে বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিটে

কালীদাসীরা হয়তবা পার্বতী হয়! পারু হতে পারে-কি?

পৌরাণিক দরজায় এই-যে এত-এত  পার্শ্ব অভিনেত্রীর মুখ;

মেরিলিন মনরোর ধার করা লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙিয়ে সত্যিই কি হেসে ওঠে হাড়কাটা গলি—?

 

দর্শক

সহস্র মাথার ভিড়ে আমি এক সংখ্যার এ্যাভারেজ,

দর্শকসারিতে এ-যেন অভ্যস্ত জীবন।

স্বভাববশত তাই উঁকি মারি, চোখে পড়ে ভাঁড়ের বহর।

‘লাগ ভেলকি লাগ’ বলে দৃষ্টি ঘোরানো-তো জাদুকরের পুরনো অভ্যেস।

বোকাচোখে চেয়ে থাকি।

পা-কেন্দ্রিক দীর্ঘ এক ভাষণ শেষে প্রদর্শনী হবে;

পা-হীন প্লেয়ারের হা-ডু-ডু কসরত!

 

বিবৃতি

এমন ভাবনা কেন?

বিপ্লবীর কি প্রেম থাকতে নেই?

নিহত যোদ্ধার পকেটেও পাওয়া গেলো, যুগল চিঠির বাস।

এক চিঠিতে লেখা ছিল ভালোবাসি ভালোবাসি—

অন্যটায় দীর্ঘশ্বাস!!

 

ইমিটেশন

আমরা রোগে আগ বাড়িয়ে ডাক্তারি আর গানে যেন সবাই তুখোড় শিল্পী।

নিজাম কাকা;

আমরা কবে বুঝব?

আনাড়ি হাত যদি দেদারসে রোপণ করে এলোমেলো ফসলের বীজতলা,

একদিন ঠিক ফুঁসে উঠবে ধর্ষিত সবুজ মাঠ,

সোনাধানে আগুন মিছিল—

ফসল তোলা দিনের মতো, আমাদেরও আসে ব্যস্ত কাব্যমৌসুম।

ঝাঁকে-ঝাঁকে কবি আর কবিতা—

বহর সমেত কেরানি গোছের অনেকে হেঁটে যায়,

কেউ-কেউ আবার পেছন থেকে হাম্বাস্বরে ডেকে ওঠে ক-বি ক-বি!

 

সায়াহ্ন

রাতের রুপালি পারফর্ম সত্ত্বেও, দিনে জ্বললে ল্যাম্পপোস্টের আলো যেন এক বিষণ্ণ আকুতির গান।

আর আমরাও তো এমনই,

বৃষ্টি থেমে গেলে ছাতাটাই বোঝা।

শত-অবহেলার মাঝেও;

প্রত্নতত্ত্ব শরীরজুড়ে তবু কেন প্রগাঢ় গোপন প্রেম?

শৈশব হারিয়ে সবাই একদিন টের পায়,

কী করে সবার অগোচরে ঝরে গেছে দুরন্ত ওড়ার ডানা।

 

Print Friendly, PDF & Email
বিনয় কর্মকার

Read Previous

যাপন

Read Next

গ্রহণ করো প্রেম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *