
চিত্রকর কি যুদ্ধের রাতেও ছবি আঁকেন?
উদ্বাস্তু শিবির, গণহত্যা, দুর্ভিক্ষ, লাশ, রক্ত, গণকবরের ছবি…
‘রাইফেল রুটি আওরাত’ নামে নাকি একটা বই
আছে। আমি পড়িনি।
যুদ্ধে কি আওরতের দরকার পড়ে?
যুদ্ধে রুটির দরকার পড়ে।
রুটি রসদ।
রাইফেল ও গোলাবারুদের সাথে নারীরাও কি রসদ?
সিরিয়ায় তো অনেক নারী যুদ্ধে গিয়ে নাম লিখিয়েছিল।
শেষাবধি তাদের কপালে কী হল?
চিত্রকর,
আপনি কার ছবি আঁকেন?
শিশু, নদী, গাছ, মানুষ, পাখি…
পাখি মারার মতো মানুষ মারছে রুশ সেনারা
পাখি মারার মতো মানুষ হত্যা করছে ইসরাইলিরা
হরিণ শিকারের মতো সৌখিনভাবে নারী ও শিশুহত্যা
করছে যুদ্ধবাজরা!
ফিলিস্তিনে ঠাণ্ডা মাথায় সাংবাদিক শিরিন আবু আহলেকে
হত্যা করা হয়েছে।
‘স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বর।’
ইউক্রেনের আকাশে কুণ্ডলী পাকাল ধোঁয়া।
রুশ সেনাদের আনন্দ যজ্ঞ চলছে। মানুষের ওপর নৃশংস
হামলা চালিয়ে, পুতিনের উগ্র নেশার ভদকা পান করছে
রাশিয়ার সেনারা!
গণহত্যা চালিয়ে প্রতিদিন নতুন নতুন গণকবর বানাচ্ছে।
এইসব সেনা দখলদারিত্বের নেশায় শান্তি ফিরিয়ে
আনার নামে যুদ্ধ করে।
মানুষকে উদ্বাস্তু বানিয়ে, গণহত্যা করে,
নগরীর ওপর বোমা ফেলে, দেশকে ধ্বংসস্তূপ বানিয়ে শান্তির
নামে যুদ্ধ চালায়।
যুদ্ধ ও শান্তির ফল ভোগ করছে আফগানরা।
তারা উদ্বাস্তু শিবিরে ত্রাণ-সাহায্যের আশায়, বিদেশি বিমানের
দিকে তাকিয়ে আছে।
একটা দুর্ভিক্ষের নগর এখন আফগানিস্তানের মাটি, শহর,
কাবুল, কান্দাহার…। একটা ধ্বংসস্তূপ আর গণকবরের নগরী
ইউক্রেন। জেলেনস্কির ভাষায়, সেভেরোদোৎস্ক ও লিসিচানস্ক
এখন ‘মৃত শহর’।’
চিত্রকর,
ছবি এঁকে মানুষের জন্য ফুলের শহর বানাতে
চাইলেও, যুদ্ধবাজরা কি তা চায়?
ছবি এঁকে শিশুদের জন্য আনন্দের শহর বানাতে চাইলেও,
যুদ্ধবাজরা কি শিশু ও ফুলের শহর চায়?
শহরে শহরে গাছ লাগিয়ে পাখি ও ফলের শহর বানাতে
চাইলেও, যুদ্ধবাজরা কোনো সুফলের শহর চায় না।
তারা রক্ত চায়।
অতএব
দুর্ভিক্ষের ছবি আঁকা ছাড়া রং ও তুলিতে কিছু আঁকার
থাকল না।
পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সাধারণ মানুষের ভাগ্য
এখন যুদ্ধাপরাধীদের হাতে।
বিষাক্ত রাজনৈতিক ধোঁয়ায় সমগ্র পৃথিবী কাতর।
দেশত্যাগী বাস্তুহারা মানুষের সামনে দুর্ভিক্ষের ছবি ছাড়া
যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে শান্তির কোনো ছবি
থাকে না।