অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
অক্টোবর ১৮, ২০২৪
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অক্টোবর ১৮, ২০২৪
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানহিম আহমেদ -
তানহিম আহমেদ – যুগল কবিতা

যুদ্ধ ও রাষ্ট্রবিষয়ক

তুমি, আমি ও সে— তিন না অসংখ্য?
ফ্রডুলেন্ট প্রশ্নোত্তর পর্বে শুধু ঝরছে কালক্ষেপণ আর
বিরতির মৌতাত;
আমার রঙিন করোটির ভেতরে
তকতকে ঝকঝকে কল্পতরুরা বেঁধেছে
মৌসুমি পিকনিক স্পট; ভ্রমের তিলক; ঠাট্টাচ্ছলে এই
জহুরির শরীরে হুল
ফুটিয়ে যাচ্ছে বাক্যবাণে ঋদ্ধ মৌমাছিরা— কাঁদি, শুধু
কাঁদি।

নিজেরে লাগে ভাঙা বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তির মতো…
নিজেরে লাগে বাবরির মতো নিরালা ~

ভাবি, বসে থাকব তোমাদের শানবাঁধানো
ঘাটলার পাড়ে— বুমেরাং হয়ে
ফিরে আসবে

আমার ছন্দপতনের উষ্মা;
রাষ্ট্রবিরোধী কূটবুদ্ধির শলাকা জ্বালিয়ে দেব আমি
গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে— পিঠাপুলির উৎসবে
পাচার হবে আমার পঙক্তিরা— তারা
স্লোগান দেবে কাঁটাতারের দৌরাত্ম্য ও দ্রব্যমূল্যের
ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে লাগাতার।

নিজেরে লাগে ধূমায়িত ৯/১১-র মতো বিতর্কিত…
নিজেরে লাগে কিয়েভের কেতাদুরস্ত
পত্রিকাওয়ালার মতো নিঃস্ব ~

আমরা একেকটা রংভর্তি বেলুন— একদিন
ফেটে যাব, একদিন সেঁটে যাব
ঠিকঠাক স্ব স্ব অবিচুয়ারির
ওপরে, যাবে তো? পুঞ্জীভূত হাহাকারে আঁকা হবে
আরেকটি গোয়ের্নিকা অথবা মন্বন্তরের আখ্যান।

আমাদের স্পর্শমাখা গ্রেইভইয়ার্ডকে
পদদলিত করে যাবে
ট্যাঙ্ক ও বারুদ বোঝাই পুলিশি সমকাল; আমাদের
বাগানের ফুল— ভুলে লণ্ডভণ্ড করবে
বোমারু মিগ-২৯।

ধুত্তরি ছাই! শোনো শোনো, পারলে হালকা চালে
ডুমসডে ক্লকের কাঁটাগুলি গুড়িয়ে দিও— কবির
মিনতি, তোমার স্মরণে,
প্রিয় পাঠক, ফুটিও প্রতি অফেন্সিভের বিপরীতে
একগুচ্ছ কৃষ্ণচূড়ার সৌরভ , প্লিজ!

 

মঁসিয়ে জেরুজালেম

অম্বরে শম্বর হয়ে দাঁত কেলিওনা— ব্রাদার,
নামো আমাদের হেলেতে, খাও প্রবাদ-প্রবচনের সুমিষ্ট
আরক; তাঁবুর পাশেই কি দাঁড় করাইনি মইখানি?
আমাদের মারবে বলেই কিনা হন্তারকেরা ঐ
ইউটুবের পুরানো বিজ্ঞাপনের মতো স্মৃতিকুহরে হীরার
দ্যুতিতে হচ্ছে বিচ্ছুরিত, আহা! —থলথলে
বেদনাবীথিকা চড়েছে নাগরদোলায়।
আমরা তো তোমার বোমাক্লিষ্ট কলোনির কয়লায়
দাঁতব্রাশ করিনি, চুরি করিনি তোমার ফেজের প্রসিদ্ধ
টুপি বা বক্ষের ২৪ ক্যারেটের চকচকে
দুঃখকাঞ্চন, ভ্রাতঃ! নামো, নামো, ও মঁসিয়ে জেরুজালেম,
অশ্রুপট্টি মেরো না আর জ্বরগ্রস্ত মায়ের চাদরে; বন্ধু,
ভাঙো সহোদরার কফিনে পোঁতা এমুলেটের মন্ত্র,
বিলি কোরো না ইন্তিফাদার ইশতেহার… তুমি
তো জানোই, মানুষ থোড়াবহুত খামখেয়ালীই বটে—
ভাইটি, অন্তঃকরণে মোটেও
পুষো না প্রজ্জ্বলিত মনস্তাপের ধিকিধিকি আগুন।

বুলেটে ঝাঁঝরা পর্দা দুলিয়ে গেছ অলিভবনে, হয়েছ হরিণ;
ছোট্টটি, নামো তো বাপু, চলো যাই বৈশাখী মেলায়,
কিনি বাংলার একতারা— গাই শেমা দুজনে,
ডেকে আনি বেচারা হাশেমটাকে তক্কার মাঠের আড্ডাতে,
ফোঁড়ন কাটি কথায় কথায় ক্লুলেস। হু হু হা হা কারে
কাঁপবে রে অলিভের মসনদ। মারব রাজা-উজির খুব।
আয় রে বোকা, আজ মৃত‌্যুর সাথে পিস ট্রিটি স্বাক্ষর,
তিস্তার পাড়ে বসে
পানির ন্যায্য হিস্যা না চেয়ে খোদার
দ্বারে ভিখ মেগে নেই তোর রুহের তরে দরুদ ও সালাম;
অলিন্দে বসে কাঁদে জেরুজালেম, রিক্ত জেরুসালেম হে!

তানহিম আহমেদ

জন্ম ২০০৩ সালের ৩ এপ্রিলে, ঢাকার অদূরে বন্দরনগরী নারায়ণগঞ্জে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়ন করছেন। বাংলা কবিতায় আগ্রহী।

 

Print Friendly, PDF & Email

Read Previous

ঘরবাড়ি ঘুমকথা

Read Next

তিনটি অণুগল্প – অগোছাল স্বপ্ন, নারীর টানে ও উঠতি সংসার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *