অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
মে ১০, ২০২৫
২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মে ১০, ২০২৫
২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাম্মি ইসলাম নীলা -
কবি আসাদ চৌধুরী- একটা স্মৃতিচারণ

কবি আসাদ চৌধুরী- একটা স্মৃতিচারণ-
আমি বরাবরই সেলিব্রেটিদের এভয়েড করি। যেমন তাদের দেখে এগিয়ে যাওয়া কিংবা ছবি তোলা এসব থেকে আমি দূরে থাকি। খুব কাছের লোকেদেরছাড়া তেমন কারোর সঙ্গেই ছবি-টবি তুলি না। তো ঘটনাটা ২০১৮ সালের। বই মেলায় Kader Babu ভাইয়ার স্টল ‘বাবুই’এ কবি আসাদ চৌধুুরী এলেন। আগে মেলায় গেলে বেশিরভাগ সময় বাবু ভাইয়ের স্টলে বসা হোতো। কারণটা সহজ, বাবু ভাইয়ার সঙ্গে আমার বেশ অনেকটা সময় একসঙ্গেই কেটেছে, সেই ২০১৪-২০১৬ সাল পর্যন্ত। আমরা একসঙ্গে বাবুই ফ্যাশন হাউজ নিয়ে কতো সুন্দর দিনগুলো কাটিয়েছিলাম আজীজ সুপার মার্কেটে। আচ্ছা, সেসব আলাপ বাদ দিই। তো কবির সঙ্গে অনেক লোকজন ছিল। একের পর এক মানুষ দলে দলে আসতেছে, ছবি তুলতেছে, অটোগ্রাফ নিচ্ছে। আসাদ চৌধুরী আমার পছন্দের কবি, তাঁর কবিতায় প্রাণ আছে। আমি পছন্দ করি। কিন্তু এত লোকজনের সমাগম আমার ভাল্লাগছিল না বলে, একপাশে চেয়ারে চুপ করে বসে রইলাম।
লোকজনের ভিড় কমলে কবি ভেতরে এসে বসলেন আমার পাশে। বললেন, এই মেয়ে তুমি আমাকে চেনো না? বললাম, আপনি জমানার বিখ্যাত কবি! না চিনে উপায় আছে? তিনি বললেন, তাহলে কথা বললে না যে?! তোমার নাম কি? বললাম, আমি কথা বললে কিছুক্ষণ পর আপনি ভুলে যেতেন আমাকে! এমনকি আমার নাম নীলা, সেটাও আপনার মনে থাকতো না হয়ত! কথা বলিনি বলেই আমাকে আপনার মনে থাকবে! তিনি বললেন, সত্যিই তুমি অবাক মেয়ে। তোমাকে মনে থাকবে। পরে একসঙ্গে চা খেলাম। তিনি একটা প্রোগ্রাম শেষ করে এসেছিলেন। গলায় দারুণ সুন্দর একটা উত্তরীয়। বললাম, আপনার গলায় এই উত্তরীয় ভীষণ সুন্দর লাগছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ফটোগ্রাফারকে বললেন, ছবি তোলো। এই মণিহার আমি নীলাকে পরাতে চাই! আমি জাস্ট থ হয়ে রইলাম। এত ভালোবাসা কোথায় রাখি! সঙ্গে Jaglul Haider ভাইয়া ছিলেন। জগলুল ভাইয়া ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। আগে ভাইয়ার সঙ্গে কতো আড্ডা হোতো। প্রিয় বাবু ভাইয়া, জগলুল ভাইয়া, খুব মিস করি আজীজের দিনগুলো। মিস করি তোপখানা রোডের দিনগুলো। আহা সময় কতো দ্রুত চলে যায়…!
২০১৮ সালের পর আবার ২০২২ এ কবির সঙ্গে দেখা হয়েছিল হোটেল কারিতাসে। ওয়ার্ল্ড পোয়েট্রি ডে’র একটি আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামে। সিঁড়ি দিয়ে একসঙ্গে উপরে উঠেছিলাম আমরা। কবির কষ্ট হচ্ছিল। এর ফাঁকে বললেন, নীলা, তোমার সঙ্গে দীর্ঘ সময় পর দেখা! সেখানে আমি একটি কবিতা পড়েছিলাম ‘এ কেমন জীবন’ শিরোনামে। কবি অবাক হয়ে শুনেছেন। পরে খুব প্রশংসা করেছেন। ওটাই ছিল লাস্ট দেখা।
বিদ্র: স্মৃতি হয়ে থাকুক ছবিগুলো।
Print Friendly, PDF & Email

Read Previous

স্মৃতিতে হুমায়ূন ফরিদী

Read Next

সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *