অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
এপ্রিল ১৯, ২০২৪
৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এপ্রিল ১৯, ২০২৪
৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈয়দ নূরুল আলম -
মহাকালের রুদ্র ধ্বনি : সংগ্রামী জীবনের বেদনাহত হাসি

রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, প্রশান্তি না থাকলে ভালো কবিতা হবে না। সে কবিতার স্থায়িত্ব থাকবে না। অপর দিকে রবীন্দ্রনাথের এ কথা প্রত্যাখ্যান করে জীবনানন্দ বলেছেন, রচনার ভেতর সত্যিকার সৃষ্টির প্রেরণা— এটাই দেখার বিষয়। তার সুরটা প্রশান্তির না অশান্তির সেটা বড় ব্যাপার নয়।

নুসরাত সুলতানা দীর্ঘদিন ধরে কবিতা লিখছেন। সম্প্রতি অনুপ্রাণন প্রকাশন থেকে তাঁর কবিতার বই ‘মহাকালের রুদ্র ধ্বনি’ প্রকাশিত হয়েছে। আমরা এখন নুসরাত সুলতানার কবিতায় রবীন্দ্রনাথের প্রশান্তি খুঁজব, নাকি জীবনানন্দের সৃষ্টির প্রেরণা খুঁজব? এক্ষেত্রে আমরা নুসরাত সুলতানার একটা কবিতা দেখে নিই। তিনি ‘কেন মানুষ হলাম’ কবিতায় লিখেছেন, ‘পাখিদের জাতিগত দাঙ্গা নেই/ গাছদের নেই জাতিগত দাঙ্গা।/ নেই পাহাড়, সমুদ্র কিম্বা নদীর।/ আমি না হয় যে কোনো কিছু হতাম!/ হতাম না হয় ভাঁটফুল/ কিম্বা নাইট কুইন/ নিমিষেই ঝরে যেতাম/ তবুও দেখতে হতো না স্বজাতির/ দানবীয় উল্লাস!/ স্রষ্টা আমি কেন মানুষ হলাম!’ এই কবিতায় সাধারণভাবে মনে হবে, এখানে কবির ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের প্রশান্তি ও জীবনানন্দের সৃষ্টির প্রেরণা দু’টোই আছে, যে কারণে ইতোমধ্যে নুসরাত সুলতানার এক শ্রেণির পাঠক সৃষ্টি হয়েছে।

আমাদের চারপাশে যে জগত তৈরি হয়েছে তা তিনি কবিতায় তুলে ধরেন পরম মমতায়। যে-সব ব্যথা বেদনা, অনিয়ম, অনাচার, অসভ্যতা, তাকে নাড়া দেয়, এসবের নতুন অর্থ নির্মাণে তিনি হয়ে ওঠেন তৎপর। তিনি নৈঃশব্দ্যের মধ্য দুপুরে কিংবা গভীর রাতে, প্রেম ভালোবাসা, অনুরাগ-বিরাগের, কথা বলেন নিজের জগতের সাথে, যা পরবর্তীকালে আপেল ফলের মতো এক একটা কবিতা হয়ে ওঠে। সে কবিতা মনোযোগী পাঠক সহজেই অনুপ্রাণিত হন, এবং পান প্রথম চুম্বনের মতো পাঠ সুখ। তাঁর কবিতার অবকাঠামো তাঁর একান্ত নিজস্ব। এতটাই নিজস্ব যে, নাম না বললেও দশটা কবিতার মধ্যে নুসরাত সুলতানার কবিতা সহজে আলাদা করা যাবে। পথের পাশে ঘটে যাওয়া সব বিষয় কিংবা মুষ্টিবদ্ধ মিছিলে অথবা জ্যোৎস্নায় ভেজা উঠোনের দিকে সাধারণ মানুষ তাকায়, কিন্তু দেখে না, দেখার কাজটি কবি নুসরাত সুলতানা মমতার সাথে করেন এবং সে সব দিয়েই শিল্পী তৈরি করেন তার কবিতার শরীর। যেমন, ‘উচ্চবিত্ত ভোগ করে—/ মাংস, মদ আর বিভিন্ন মনুষ্য শরীর।/ নিম্নবিত্ত ভোগ করে বাসি-পচা, বস্তির দূষিত বাতাস/ অবাধ যৌনতা, আর ব্যাপক স্বাধীনতা।/ মধ্যবিত্ত ভোগ করে—/ নীতি, আদর্শ, অনিশ্চয়তা/ গ্যালন, গ্যালন স্যাক্রিফাইস (কবিতা : ভোগ, পৃষ্ঠা ৩২)।’

এখানে কবির ভাবনায় দোল খায় মানবিকতা-শ্রেণি সংগ্রামের মৌলিকতা।

দীর্ঘ কাব্যচর্চা শেষে, কবিতার জিওগ্রাফি জেনে, স্থির বিশ্বাসের ওপর ভর করে নুসরাত সুলতানা কবিতা লেখেন। যেখানে স্থূল আবেগ নাই, তার পরিবর্তে আছে সূক্ষ্ম জীবনবোধ, ভালোলাগার মতো এক একর সবুজ জমিন এবং ভালোবাসার তৃষ্ণা, যা তার প্রতিটি কবিতায় খুঁজে পাবে পাঠক।

কবির আরেকটি কবিতা আমরা দেখে নিতে পারি, যেখানে কবি লেখেন— ‘মাটির কঠিন বুক চিরে/ যে হাত কচি সবুজ শস্য ফলায়;/ সেই হাত ওঠে প্রেমী স্ত্রীর স্তনযুগলে।/ ওষ্ঠ দিয়ে ওষ্ঠে চাষাবাদ করে বিশুদ্ধ প্রেম।/ প্রেয়সীর নদীতে পরিভ্রমণ করেন;/ দক্ষ নাবিকের মতোই।/ নিয়তই চাষাবাদ করেন;/ ধান, গম, লাউ, কুমড়ো,/ উদ্ভিদ আর মানুষের ভ্রণ।/ চাষাবাদ করেন নির্মল হাসি, নিখাদ কান্নার।/ কেবল চাষাবাদ জানেন না স্বার্থপরতা/ আর অহংকার।/ নিরহংকারী এই কৃষকের কাছেই/ অহংকারী, ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার তাবত ঋণ।’ (কবিতা : নিরহংকারী, পৃষ্ঠা ৯৭)।

মহাকালের রুদ্র ধ্বনি                নুসরাত সুলতানা                   প্রকাশক- অনুপ্রাণন প্রকাশন প্রকাশকাল- সেপ্টেম্বর-২০২২          মুল্য – ৳ ২২০/-

এ কবিতা পাঠে পাঠক হিসেবে আমরাও শুদ্ধ হই। ঋদ্ধ হই। আমাদের মধ্যে একটা অন্যরকম ভাবনার জায়গা সৃষ্টি হয়। এটাই নুসরাত সুলতানার কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্য।

কবি মাত্রই কবিতার শরীর নিয়ে, শব্দের বিন্যাস নিয়ে, বাক্যের গঠন নিয়ে নিরন্তর করেন নিরীক্ষা। কবি নুসরাত সুলতানাও এর বাইরে নন। তিনি আলোচ্য কাব্যগ্রন্থে কবিতার শরীর নিয়ে, বাক্যের বিন্যাস নিয়ে নানাভাবে নিরীক্ষা করেছেন। তাই আলোচিত গ্রন্থে যে আটান্নটি কবিতা আছে, যেখানে ন’ লাইনের কবিতা (শিকড়) আছে আবার ঊনচল্লিশ লাইনের কবিতাও আছে (উত্তরাধিকার)। একজন দক্ষ শব্দ কারিগর এভাবে তার চিন্তাকে ভাঙতে পারেন, মননের জাল ইচ্ছেমতো বিস্তার করতে পারেন, যেটা নুসরাত সুলতানার করায়ত্ত।

কবিতায় প্রেম থাকবে, কিন্তু সে প্রেম যদি হয় ভেতর মোচড়ানো এক রক্তক্ষরণ, তখন তা হয় প্রণামী। যেমন, কাতলা মাছের লাহান ঘাই মারো বুকে,/ অই ঘাই রক্তে মাংসে।/ ক্যান এত জ্বালাস নাগর?/ আমারে বাঁচতে দে,/ হাতজোড় মিনতি করি।/ ভাতার আমারে না করুক সোহাগ,/ ভাত দেয়, কাপড় দেয়,/ ঘর দিছে,/ আর দিছে কলিজার বোটা পোলা, মাইয়া।/ তুই আমারে কী দিবি?/ সোহাগ!/ তুই তো এক বেভুল বাউল।/ নতুন গানের লাহান; / তোর নিত্য নতুন মন, নতুন চক্ষের নেশা।/ আমারে বাঁচতে দে গায়েন,/ এই বুকে মারিস না ঘাই (কবিতা : ঘাই, পৃষ্ঠা ৪৩) !’

পরিমিতিবোধ, হিউমার, আঞ্চলিক শব্দ প্রয়োগে যথার্থতা, প্রকৃতি দেখার চোখ, শব্দের নির্মেদ এসব একজন লেখক বা কবিকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করায়। যা আলোচিত গ্রন্থে সমভাবে উপস্থিত।

এ বইয়ের বেশির ভাগ কবিতাই নারীবিষয়ক। যেমন— সংস্কার, ভোগ, ভাসিয়ে দাও, উত্তরাধিকার, জায়নবাদী, প্রলম্বিত বিচ্ছেদ, প্রগতিশীল নারী এসব। এখানে ধারণা হতে পারে নুসরাত সুলতানা একজন নারীবাদী লেখক। এই সংকীর্ণতার বাইরে এসে ভাবতে হবে, বিষয় ও বক্তব্যের যথার্থতা। শব্দ প্রয়োগের চিন্তাশীলতা। এভাবে যদি পাঠক ভাবে, তা-হলে নারীবাদী বলে কোনো মানুষ বা কবিকে সীমায়িত করা যাবে না। সেটা হোক নারীর পক্ষে বা পুরুষের বিপক্ষে। এখানে পক্ষে-বিপক্ষের অজুহাত দেখিয়ে এক শ্রেণির পাঠক, এমনকি এক শ্রেণির লেখককেও বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা যায়। এটা কখনও সচেতন পাঠককে অবদমিত করতে পারে না।

তবে প্রেম-ভালোবাসা কবিতায় একটি অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ। তাই প্রেম-ভালোবাসা নুসরাত সুলতানার কবিতায় এসেছে বারবার, সে প্রেম কখনো কখনো ছাপিয়ে গেছে ব্যক্তিপ্রেম থেকে দেশপ্রেমে, প্রকৃতিপ্রেমে। যেমন, ‘যারা প্রেমেরও অধিক—/ ভালোবাসাকে ভালোবেসেছে,/ নিমজ্জনের অধিক জেগে থেকে সাহচর্য চেয়েছে,/ যারা নারী, পুরুষের অধিক/ হয়েছে মানব আর মানবী,/ চাষাবাদ করেছে মনুষ্যত্বের/ তারাই চুমুকে চুমুকে পান করেছে,/ সমঝোতার কফি।/ আর পরাভূত করেছে প্রেমকে,/ সচেতন কিম্বা অবচেতনে।’ (কবিতা : পরাভূত, পৃষ্ঠা ৪৮)।

এখানে দেশপ্রেম ও দেহপ্রেম পাঠককে একটি সরল রেখায় দাঁড় করায়।

কবি ভাঙেন, আবার গড়েন। এভাবেই ভবিষ্যৎ, যাকে বলা হয় উত্তর আধুনিকতা তার বসতি গড়েন। নুসরাত সুলতানার কবিতায় এ ধরনের কারুকাজ বেশি লক্ষ করা যায়।

একজন মানবতাবাদী কবিকে রাজনৈতিক পেক্ষাপট বা সমসাময়িক ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই আক্রান্ত করে থাকে এবং এথেকেই লেখা হয় ধ্রুপদি কবিতা। এধরনেরও কয়েকটা কবিতা রয়েছে এ গ্রন্থে। যেমন— ‘মরে যাচ্ছে নদী, মরে যাচ্ছে সংস্কৃতি।/ যাচ্ছে মরে প্রেম আর মানবতার ধর্ম।/ জেঁকে বসেছে ধর্ম-ব্যবসা, কুসংস্কৃতি, অন্ধ কামনা।/ ধার্মিক চেনে তাজবীহ, টুপি, পৈতা/ প্রেমিক-প্রেমিকা চেনে যোনি, স্তন, শিশ্ন।/ আত্মার হাহাকার দেখে না কেউ।’ (কবিতা : এবার থামো, পৃষ্ঠা ৬৬)।

অথবা—

‘ভুলে যেতে চাই রানাপ্লাজা,/ ভুলে যেতে চাই নিমতলী,/ ভুলতে চাই নুসরাতের শেষ স্বগতোক্তি,/ ‘আমি সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই’/ ভুলতে চাই এক অকাল বোধন/ ‘আবরার’ ভুলতে চাই রুপা।/ ভীষণ স্বার্থপর হয়ে/ কৃষ্ণচূড়ায় মোহাবিষ্ট হতে চাই,/ শুনতে চাই গজল, লোকজ সঙ্গীত।’ (কবিতা : ভুলতে চাই, পৃষ্ঠা ৬৩)।

এভাবে নুসরাত সুলতানার প্রতিটি কবিতা নিয়ে কিছু ভাবার অবকাশ থেকে যায়, কিছু বলার জায়গা তৈরি হয়।

এরপরও তাঁর কবিতায় যদি কিছু ছিদ্রান্বেষণ করা হয়, তাহলে কিছু শব্দ প্রয়োগ, আরোপিত মনে হবে। যেমন, ‘বোধ’ কবিতায় ১০/১১ নম্বর লাইনে লেখা হয়েছে, ‘আমি কি মেয়ে শিশুর যোনিতে কাপুরুষের প্রবেশ দেখে খুনি হয়ে উঠব না?’ এখানে যোনিতে কাপুরুষের প্রবেশ, কবি যা বোঝাতে চেয়েছেন, তার শব্দগত অর্থ প্রতিফলিত হয় না। তাছাড়া কবিতায় আগে-পরের লাইনগুলোতে শব্দ প্রয়োগে যে মাধুর্য ছিল, তা এখানে ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। অন্য কোনো শব্দ প্রয়োগেও কবি যা বোঝাতে চেয়েছেন, সেটা করা যেত। একই কথা বলা যায় ‘কসম’ কবিতায় ৮ লাইনে। বইয়ে বানানের প্রতিও আরেকটু সতর্ক হওয়া যেত। যেমন জাগো কবিতায় ২২ নম্বর লাইনে আছে ‘নৈশব্দের’, এটা না হয়ে ‘নৈঃশব্দ্যের’ হবে।

কবির বিশেষ কিছু শব্দের প্রতি দুর্বলতা আছে মনে হয়। যেমন— আদর, নগ্ন, ঠোঁট, যোনি, চুম্বন, সঙ্গম, যৌন, প্রেম, লিঙ্গ, চুমু, বেশ্যা, স্তন, শিশ্ন এসব শব্দ অনেক কবিতায় ঘুরে-ফিরে এসেছে। যেমন সংখ্যার দিক দিয়ে দেখা যায় স্তন শব্দটা বইয়ে বিভিন্ন জায়গায় এসেছে প্রায় ৭ বার, প্রেম শব্দটা এসেছে প্রায় ১০ বার। পছন্দের শব্দের আধিক্য দোষনীয় নয়, তবে বারবার পঠনে-শ্রবণে একটু ভিন্নতর মনে হতে পারে।

সবশেষে বলা যায়, ছন্দের জাদুকরী, ভাষাশৈলী, উপস্থাপনা কৌশল, এসবের কারণে নুসরাত সুলতানার কবিতা পাঠকপ্রিয়তা পাবে। কথাটা জোর দিয়েই বলা যায়।

বইটির প্রচ্ছদ করেছেন তৌহিন হাসান। সুন্দর প্রচ্ছদের জন্য ধন্যবাদ তাকে। কবিকে সাধুবাদ।

 

+ posts

সৈয়দ নূরুল আলম গোপালগঞ্জ জেলায় কাশিয়ানি উপজেলার, চাপ্তা গ্রামে বেড়ে উঠেছেন। বাবা মরহুম সৈয়দ জহুর আলী, মা মরহুম জাহানারা বেগম। গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ সব শাখায় লিখলেও নিজেকে তিনি গল্পকার পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। গল্প দিয়েই তিনি নব্বই দশকের শুরুতে লেখালেখির জগতে আসেন।

এখন গল্প-উপন্যাসই বেশি লিখছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ষোল। তাঁর গল্পগ্রন্থ ‘যুদ্ধের ছবি’, ‘ভালোবাসা(প্রা:) লিমিটেড’ ও  উপন্যাস-‘মেঘের মতো মেয়েরা’, ‘আগুনরঙা মেয়ে’, ‘জাহান ও পিতারমুখ’ বেশ পাঠকপ্রিয়তা পায়।

জাতীয় পর্যায়ে তিনি কবি জসিমউদ্ দীন  পুরস্কার, বিকাশ সাহিত্য পুরস্কার, অধিকোষ পুরস্কার, রাজশাহী সাহিত্য পরিষদ প্রদত্ত সম্মাননা অর্জন করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সাবেক কর্মকর্তা। দু’ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া নীনাকে নিয়ে ঢাকা, মিরপুর-১০ এ থাকেন।

Read Previous

প্রখ্যাত তাজিক কবি লায়েক শের আলির কবিতা

Read Next

শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল, অনুপ্রাণন – ৪র্থ সংখ্যা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *