
বিষণ্ণ তিথিগুলো-৭
আজ ভালোবাসার দিনে,
পুষ্পাঞ্জলি নিয়ে তুমি অপেক্ষায় থাকো।
অথচ কাল একটু উষ্ণতা পাইনি চেয়েও
শৈত্য প্রবাহে নিজেকে সমর্পণ করে
বাধ্য হই ক্রীড়নক হতে এক দীর্ঘ রাত্রির
দূর থেকে দেখো তুমি আনন্দ লুটো-
মাঝে মাঝে অপরিচিতের ছায়া দেখি ঐ মুখে
সময় কি চলে গেছে গন্তব্যের পানে?
শূন্য স্থাপনা নিয়ে বসে আছি আমি।
কী জানি কী ঘটে যায়, জানার বাইরে থাকে প্রিয় সব রঙ
এতো অভিজ্ঞান নিয়ে আমার কী হবে
ছিন্নপত্রে দাগ দিয়ে কার চিহ্ন রাখি?
বিষণ্ণ তিথিগুলো-৮
তোমার মুখটা দেখবো বলেই
আমার এই দীর্ঘ ভ্রমণ
ভ্রমণ শেষে এখন দেখি
তোমর যাত্রা অন্য পথে
চিহ্নও নেই খুঁজে পাবার
লোপাট করে চলে গেছো,
সকল রঙিন বেলুন দেখি
উড়ে গেছে আকাশ পানে
যে ক-খানা পড়ে আছে
তারাও আজ ছিন্ন ভিন্ন।
এটাই বুঝি ভবিতব্য?
কি লাভ তবে ধৈর্য্য ধরে?
বিষণ্ণ তিথিগুলো-৯
বুক পকেটেই রয়ে গেছে অশনি সংকেতের চিহ্ন
এটা নিয়েই ঘুরিফিরি, মনকে বুঝাই বাস্তবতা
ভুল পথে যাই বারে বারে
কে ফেরাবে জানা তো নাই
স্রোতের সাথে চলতে গিয়েও ব্যর্থতাকে বরণ করি
সবাই হাসে, হাসার কথাই ঘটলে এমন জীবনব্যাপী।
স্বপ্নরা সব রঙিন ছিল, আজকে সবই ধ্বংসাবশেষ
টুকরো ইটের শরীর আছে চুন-সুরকির দেখা তো নেই
মাটির অতল গহ্বরে আজ সভ্যতাটার লীলাভূমি।
বিষণ্ণ তিথিগুলো-১০
হাইরাইজের শরীর ঘেঁষে মাথা বের করা দুর্বল কাঁঠাল গাছটাকে আজ বড়ো আপন মনে হয়। তার পাতার ঠোঁটে জলবিন্দু দেখে দেখে কতো দুপুর কেটে গেলো আমার। তার ফল পাকার আগেই সবজি হয়ে হারিয়ে গেলো গহ্বরে।
এ রকম দুর্বল গাছপালা কিংবা মানুষের জীবন একই সুতোয় বাধা। আহা জীবন, শ্বাস ফেলার ফুসরত নেবার আগেই চেপে ধরা গলা নিয়ে কতো টুকু সাধা যায় বলো?
দুর্বল স্বর নিয়ে সারগাম হলো কই? একটা জীবন এই আঁধারের বুকের কাছেই নত হয়ে কেটে গেলো, জানলে না তুমি!
বিষণ্ণ তিথিগুলো-১১
ভালোর জন্যই বলো তুমি, পথ দেখাও
আজ জানি না বাক্যগুলি কোথায় পাও।
কিছু বাক্য ভীষণ তেতো, কষ্ট পাই
অবাক হয়ে মুখের পানে শুধুই চাই।
হয় না মায়া বন্ধ হয় না বাক্য সব
ধীরে ধীরে স্তব্দ আমি, জ্যান্ত শব।
পূর্ণ চাঁদের তিথির গায়ে কালোর ছোপ
নেই জোনাকি আঁধার ভরা সবুজ ঝোঁপ।
সেই ঝোঁপেতে ষড়যন্ত্র পথ খুঁজে
সেই ঘ্রাণটা কেউ বুঝে না, কেউ বুঝে।
যে বুঝে সে ভবিষ্যতের পথ হাঁটে
যে বুঝে না গোড়ায় বসে ডাল কাটে।
এক সময় সে স্বর্গ থেকে ধপাস হয়
পদতলেই জীবন কাটায়, নীচেই রয়।
তিথির গায়ে বিষণ্ণতার ছোপ লাগে
এই আঁধারে কোথায় বলো কে জাগে?