অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এপ্রিল ১৮, ২০২৪
৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সন্তোষ কুমার শীল -
আলোর খোলস : যাপিত জীবনে ক্ষণিক দৃষ্টিপাত

এগারোটি ছোটগল্প নিয়ে গল্পকার ঝুমকি বসু’র আলোর খোলস বইটি। প্রতিটি গল্পের বর্ণনায় তিনি সহজ-সরল, অনাড়ম্বর, নির্মেদ ভাষাশৈলী ব্যবহার করেছেন যা সব শ্রেণির পাঠকের কাছে সহজেই বোধগম্য। বিশেষ করে প্রতিটি গল্পের সংলাপে কম-বেশি আঞ্চলিক কথ্য ভাষা ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। যদিও সেটা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের খুলনা-বাগেরহাটের কথ্য ভাষাই বেশি। সার্বিকভাবে বইয়ের আলোচনার পূর্বে গল্পগুলোর সাথে পাঠককে একটু সংক্ষিপ্ত পরিচয় করিয়ে দিতে চাই—

বইয়ের প্রথম গল্প ‘শেষ থেকে শুরু’। ষাটোর্ধ জাফর হোসেন আর মাজেদা বেগমের দাম্পত্য জীবন সাতচল্লিশ বছরের। এই বয়সে এসে গাঁয়ের বাড়ি-জমি বিক্রি করে তারা ঢাকা শহরে বসবাসরত দুই ছেলেমেয়ে রনি ও বনির কাছে স্থায়ীভাবে চলে আসে। যদিও আসার কারণটি গল্পে খুব স্পষ্ট নয়। আরও অস্পষ্ট, উচ্চশিক্ষিত ও বড় চাকুরে দুই ছেলেমেয়ের বাবা-মাকে নিষ্ঠুরভাবে আলাদা করে দেওয়ার বিষয়টি। সাতচল্লিশ বছর একত্রে থাকার অভ্যাস বাধ্য হয়ে ভেঙে দু’জন আলাদা থাকতে গিয়েই জীবনের ভার দুর্ভার হয়ে ওঠে। আর তা বহন করা যখন একেবারেই অসাধ্য তখন এক অভাবিত সিদ্ধান্ত নেয় দু’জনে— পালিয়ে চট্টগ্রাম চলে যাবে। ছেলেমেয়েরা অফিসে গেলে দু’জনে নতুন আশা, স্বপ্ন বুকে করে চট্টগ্রামগামী তূর্ণা এক্সপ্রেসে চেপে বসে।

একুশ শতকের সমাজ জীবনে অবিশ্বাস্য গতিতে মূল্যবোধ হ্রাস পাচ্ছে। সাথে সাথে প্রেম-ভালোবাসা, শ্রদ্ধা-সম্মানের স্থানটিও হারিয়ে যেতে বসেছে ব্যক্তির জীবন থেকে। তারই একটা চিত্র যা আজকাল বাণিজ্যিক সিনেমা, গল্প, উপন্যাস এমনকি গানেও উপস্থাপিত হচ্ছে। কিন্তু গল্পকারের যদি এটুকু বলার দায় থাকে, ব্যক্তি তথা সমাজের যাত্রা আরোহণের দিকে অবরোহণের দিকে নয়; তাহলে সে ইঙ্গিতটুকু পাঠককে দিতে পারা যেত হয়তো।

দ্বিতীয় গল্পটি ‘সূর্যমূখী জীবন’। চট্টগ্রামের বীর সন্তান মাস্টারদা সূর্য সেনের বিয়ে এবং অতি সংক্ষিপ্ত দাম্পত্য সময়টুকু নিয়ে চমৎকার

এ গল্পের অবতারণা। বিপ্লবের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত সূর্য সেনের মা এবং বোন ছাড়া অন্য নারীর সাথে দেখা করাও নিষেধ। স্বজনরা কৌশলে তাঁকে বিয়ের পিঁড়িতে বসায়। কিন্তু প্রকৃত বিপ্লবী কখনো পথভ্রষ্ট হয় না। সূর্য সেন ফুলশয্যার রাতেই গৃহত্যাগ করে। আর তার কিছুদিন পর বিপ্লবীদের গোপন আস্তানা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। রত্নগিরি জেলে বন্দি জীবনের অবকাশে স্ত্রী পুষ্পকুন্তলার প্রতি তাঁর গভীর আবেগ জেগে ওঠে। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। স্বামীর উদাসীনতায়, অদর্শনে, প্রেমহীনতায় নিজের জীবন বোঝা হয়ে ওঠে পুষ্পকুন্তলার কাছে। অযত্ন-অবহেলায় সে টাইফয়েড বাঁধিয়ে বসে। এ যেন রীতিমতো আত্মহননে সঙ্কল্পবদ্ধ।

স্ত্রীর অসুস্থতার খবর জেলে পৌঁছালে লৌহকঠিন মানুষটির হৃদয়ও তোলপাড় করে— বিয়ের পর স্ত্রীকে ন্যূনতম ভালোবাসাটুকুও দিতে পারেননি। বারে বারে ছুটির আবেদন করেন কর্তৃপক্ষের কাছে। একমাসের ছুটি যখন মঞ্জুর হয় সূর্য সেন পুলিশ পাহারায় বাড়ি ফিরে দেখেন ততদিনে সব শেষ— পুষ্পকুন্তলা মৃত্যুশয্যায়।

‘বিজলী শাড়ি ঘর’ গল্পের নায়ক কাজল ঢাকায় একটা অফিসে চাকরি করে। সে ভালোবাসে তার পাশের অফিসে চাকরিরত সারাকে। কিন্তু কাজলের বাবা জাফর হোসেন হঠাৎ করে ফোনে নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে কাজলকে বাড়ি এনে একেবারে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেন। অবশ্য গল্পের মধ্যে জাফর হোসেনের ছেলের সাথে এই মিথ্যাচারের সঙ্গত কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। নববধূর নাম মুক্তা। বিয়ের পর মাসখানেক মুক্তা-কাজলের সুখের সংসার তরতরিয়ে চলছিল। আবার সারার সাথেও কাজলের গোপন অভিসার চলে। কাজল এমনই মেরুদণ্ডহীন অসংযমী পুরুষ যে মুক্তার সাথে তার বিয়ের কথা সে দিব্যি গোপন করে যায়। এবং দুই নারীর একান্ত সান্নিধ্য উপভোগ করে। ঠকায় তার স্ত্রী মুক্তাকে আর আগের প্রেমিকা সারাকেও। কিন্তু তার এই মিথ্যাচার অল্পদিনের মধ্যেই প্রকাশ হয়ে যায় যখন স্ত্রীকে নিয়ে বিজলী শাড়িঘরে শাড়ি কিনতে আসে কোনো এক শুক্রবারে। সারাও তখন সেখানে শাড়ি দেখছিল। উপায়ান্তর না দেখে কাজল সারাকে ফোনে মেসেজ লিখে ঘটনাটার ইঙ্গিত দিতেই সে মুক্তার চোখের সামনে কাজলকে সপাটে এক চড় কষিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে যায়।

‘টুং টাং টুং’ গল্পে রাফি এবং কনকের ছোট্ট সংসার। রাফি অফিসে গেলে কনক মেতে ওঠে আইফোন নিয়ে। অপরিচিত বিভিন্নজনের সাথে চ্যাটিং করা তার নেশা। একসময় সে স্বামীর কাছে ধরা পড়ে। তাকে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছেও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু গল্পের শেষে এসে দেখা যায় সে আবার মেসেজ বিনিময়ের খেলায় মেতে উঠেছে। প্রযুক্তি-নির্ভর জীবনে এমনটা আজকাল ঘটেই চলেছে আকছার।

‘প্রমিতা’ গল্পে এক পার্টিতে গল্পের নায়ক সুমন নিজের নববিাহিত স্ত্রীকে তার বন্ধু অভ্রর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। আর পরিচয় পর্বের পর থেকেই স্ত্রীর ভিতর একটা মানসিক অস্থিরতা আর পরিবর্তন দেখে সুমন নিশ্চিত হয় যে অভ্র আর প্রমিতার মধ্যে পূর্ব পরিচয় আছে। কিন্তু কী সেই পরিচয়ের সূত্র! বিষয়টা বোঝার জন্য প্রমিতার অমতে সুমন জোর করে অভ্রকে হানিমুনে নিয়ে যায়। কিন্তু কোনো তথ্য বের করতে সমর্থ হয় না। তাই দ্বিতীয় চেষ্টা করে, অভ্রকে ডিনারে ডাকে। গল্পের এই পর্বে এসে নায়ক বন্ধুর অবিশ্বাস্য অতীত উদ্ধারে সফল হয়— অভ্র প্রমিতার খালাতো বোনের রেপিস্ট। তাই তাকে নিজের হাতে হত্যার পরিবর্তে ফালুদার সাথে দুটো ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দেয় যাতে ড্রাইভিং করতে গেলে অ্যাক্সিডেন্ট ঘটে। যদিও প্রমিতার আশা পূর্ণ হয়, তবে অভ্রর তেমন কিছু হয়নি। সুমনের সংশয় আর প্রমিতার প্রতিশোধ চেষ্টার মধ্য দিয়ে শেষ গল্পটি।

‘প্রমিতা’ গল্পটির মতোই ‘টেডি বিয়ার’, ‘মিথ্যা বকুল’, ‘এক পাতা ঘুম’ গল্পগুলোর কাহিনী ও বর্ণনাশৈলীতে যথেষ্ট চমৎকারিত্বের অভাবে কিছুটা হলেও ছোটগল্প হিসেবে এগুলো সুখপাঠ্যতা অর্জনে অক্ষম হয়ে উঠেছে।

‘সবিতার সংসার’ গল্পটিতে নয় বছরের সবিতাকে মোহন দাসের সাথে বিয়ের বন্ধনে জড়িয়ে দেওয়া থেকে গল্পের শুরু। যখন একটি কিশোরীর পুতুল খেলার সময় তখন যদি তাকে সংসার নামক জটিল চক্রে জুড়ে দেওয়া হয় তাহলে যে কী অবস্থা হতে পারে তা পাঠকমাত্রই অবগত আছেন। অন্যদিকে স্বামী মোহন দাস লোকটি নিতান্ত ক্ষেপা। রেলওয়ের চাকরি হুট করে ছেড়ে শুরু করে পত্রিকা বিক্রি। সেখান থেকে আর্মিতে যোগদান। আবার চাকরি ছেড়ে পালিয়ে আসা— এমনিতর অস্থিরচিত্ত স্বামী-সংসারকে পুরোপুরি বুঝে উঠতে উঠতে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

যুদ্ধের দুর্দিনে মানুষের মুখোশগুলোও উন্মোচিত হয় সবিতাবালার চোখের সামনে। একদা বাড়ির কাজের লোক জব্বার আলী রাতারাতি রাজাকার বনে যায়। রাতের বেলা আসে সবিতার ঘর লুট করতে। পাশবিক লোলুপতায় সবিতাকে সম্ভ্রমহানির কদর্য ইঙ্গিত করে। কিন্তু নাগিনীর মতো ফুঁসে ওঠা সবিতাবালার কাছে দেশদ্রোহী, রাজাকার জব্বার আলী চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়।

একজন জব্বার আলী পরাজিত হলে কী হবে! দেশজুড়ে যে তখন জব্বার আলীদের দিন! তাই বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশি দেশের আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়। একদিন দেশ স্বাধীন হয়। সবিতাবালারাও ফিরে আসে নিজের ভিটেয়। কিন্তু ফিরে এসে দেখে তাদের সোনার সংসার লুটপাট হয়ে গেছে জব্বার আলীদের হাতে। সব হারানো সবিতাবালা তার সংসার পুনরুদ্ধারে জব্বার আলীর ঘরে নির্ভয়ে প্রবেশ করে কেড়ে আনে লুট হয়ে যাওয়া মালামাল।

উপরোক্ত গল্পের কাহিনীর সাথে বোধহয় বাংলাদেশের সিংহভাগ হিন্দু পরিবারের কাহিনীর মিল খুঁজে পাওয়া যাবে যাদের সারা জীবনের পরিশ্রমের ফসল যুদ্ধের নয় মাসে নির্মমভাবে লুট করে নিয়ে গেছে জব্বার আলীর মতো রাজাকারেরা। আর কোনোদিন তা পুনরুদ্ধার করার সুযোগ হয়নি। অবশ্য গল্পকার সবিতাবালাকে দিয়ে রাজাকার জব্বার আলীর লুন্ঠিত মালামাল কেড়ে আনার দৃশ্য তুলে ধরেছেন। এমনটিই হওয়া উচিত ছিল।

‘বিভ্রম অথবা নয়’ গল্পের নায়ক হাসানুজ্জামান একজন গল্প লেখক। নতুন গল্পের প্লট খুঁজতে যখন তিনি মরিয়া ঠিক সেই মুহূর্তে তার নিঃসঙ্গ ঘরে এক কল্পনার আগন্তুক আসেন। এবং তিনি হাসানুজ্জামানকে নিজের জীবনের কাহিনী শোনাতে থাকেন। এভাবেই গল্পের শুরু। ক্রমশ পাঠক গল্পের ভিতরে ঢুকে দেখতে পাবেন গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী অতুল প্রসাদ ও হেমকুসুমের সমাজ অস্বীকৃতপ্রেম, বিয়ে ও বিচ্ছেদের কাহিনী।

আলোর খোলস ঝুমকি বসু,         প্রকাশক : অনুপ্রাণন প্রকাশন,         প্রচ্ছদ : রাজীব দত্ত,                 প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি ২০২৩,         মূল্য : ২৭৫ টাকা

বইয়ের শেষ গল্প ‘গোলাভরা ধান’। গল্পের নায়ক মফিজুদ্দিন দস্তুরমতো একজন কৃষক, অবস্থা সম্পন্ন গৃহস্ত। তার জমিতে সোনা ফলে প্রতি বছর। কিন্তু তিনি নিঃসন্তান। দীর্ঘ দিনের সংসারে তার জোহরা তাকে কোন সন্তান দিতে পারেনি। সেই শূন্যতা পূরণ করতে মফিজুদ্দিন দ্বিতীয়বার বিয়ে করে আনে স্ত্রী সুমাইয়াকে।

জোহরা ভেবে পায় না, কেন তার সন্তান হচ্ছে না। সমস্যাটা আসলে কার! অন্যদিকে দ্বিতীয় স্ত্রী পেয়ে স্বামী বিয়ের আগের শর্ত ভেঙে তার ঘরেই থাকে। আর অজুহাত দেয় সন্তান হওয়ার। সেদিনও ঘরের দরজা খোলা রেখে জোহরা স্বামীর অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু টের পায় স্বামী সতীনের ঘরে ঢুকে দুয়ার আটকে দিচ্ছে। একজন নারীর জীবনে এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে?

কষ্ট, হতাশা, ক্ষোভ জোহরার মনে অন্য এক ইচ্ছে জাগিয়ে তোলে। সে বাড়ির কাজের ছেলে, চব্বিশ বছরের তাগড়া জোয়ান জয়নালের ঘরে ঢুকে নিজের শরীর জমিন চাষাবাদ করে আসে। আর অনিবার্য ফলস্বরূপ ফসলের আবির্ভাব টের পায়।

বইয়ের মুখবন্ধে লেখক বলেছেন, গভীর অন্ধকারের ভেতরেও যেমন আলোর স্ফুলিঙ্গ থাকে, তেমনি সেই আলোরও খোলস থাকে। গল্পের ভেতর পাঠক দেখতে পাবেন সেই খোলসের আবরণ। সেই আড়াল সরিয়ে নিলেই মিলবে আলো।

মূলত পাঠকের জন্য গল্পের ভেতর কোনো খোলসের আবরণ নেই বললেই চলে। গল্পের বয়ান একেবারেই সোজাসুজি। সুধি পাঠকের দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে না কোনো গল্পের মর্মোদ্ধারে; এমন সরল আখ্যানে লেখা গল্পগুলো।

গল্পের আড়ালে একটি করে সহজ গল্প-কাহিনী রয়েছে যা ছোটগল্পের একটা অত্যাবশ্যকীয় শর্ত। সে গল্পটি কখনো কখনো বর্ণিত গল্পকে ছাপিয়ে বড় হয়ে ওঠে, পাঠকের মনে স্থায়ী হয়ে গেঁথে যায়। পাঠক যেন লেখক বর্ণিত গল্পের চেয়েও ভিন্ন কিছু দেখতে পান, কল্পনা করতে পারেন। সেই কল্পনার কষ্টটুকুও পাঠককে করতে হবে না এই বই পাঠে।

ছোটগল্পের ক্ষেত্রে দু’টো বিষয়ে মনযোগ দেওয়া যেতে পারে। এক হচ্ছে, সুন্দর একটি কাহিনী; আর দুই হচ্ছে, অসাধারণ নির্মাণশৈলী। একটি তুচ্ছ বিষয়কেও উপস্থাপন নৈপুণ্যে অনবদ্য করে তোলার কাজ হচ্ছে ছোটগল্পের। উদাহরণে উল্লেখ করা যেতে পারে গি দ্য মোপাসাঁর ‘দ্য সাইন’ (ইঙ্গিত) গল্পটি। আবার গল্পের সুন্দর কাহিনীর ক্ষেত্রে রবি ঠাকুরের পোস্টমাস্টার গল্পের কথা ধরা যেতে পারে। অবশ্য রবি ঠাকুরের গল্পের কাহিনী ও উপস্থাপন উভয় বিষয়ই অনবদ্য, অসাধারণ।

গল্পের উপসংহারও লক্ষণীয় একটি বিষয়। সাধারণত সার্থক ছোটগল্পের এমন একটি অবস্থায় উপসংহার টানা হয় যেখানে পাঠক হয় আপন মনে বলে উঠবে— এ কী হলো! নয়তো তার মধ্যে একটা আনন্দরস বা হাহাকার ধ্বনিত হতে থাকে। সে সব বিবেচনায় ঝুমকি বসুর আলোর খোলস বইয়ের গল্পগুলোর একটিকেও এসব চমৎকারিত্বের কোনোটিরই দাবিদার বলা যায় না। তবে লেখাগুলো গল্প হয়ে উঠেছে। চর্চা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে লেখকের কাছ থেকে সুন্দর ছোটগল্প পাঠক আশা করতেই পারেন।

+ posts

সন্তোষ কুমার শীল ১৯৭৩ সালের ১৫ অক্টোবর (সার্টিফিকেট অনুসারে) পিরোজপুর জেলার বাটনাতলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পড়াশুনা শেষে শিক্ষকতা পেশায় প্রবেশ করেন এবং একই পেশায় বর্তমান আছেন। রবীন্দ্রনাথের একনিষ্ঠ ভক্ত এ নিভৃতচারী ঔপন্যাসিক মূলতঃ একজন সর্বগ্রাসী পাঠক। বই পড়া, গান শোনা এবং সাহিত্য সাধনায় সময় যাপন তাঁর একান্ত প্রিয়। শিক্ষকতার পাশাপাশি ছোট গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ এবং রম্য রচনার চর্চা করেন। এ পর্যন্ত তাঁর আটটি বই প্রকাশিত হয়েছে। “একাত্তরের কথকতা” তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস।

Read Previous

প্রখ্যাত তাজিক কবি লায়েক শের আলির কবিতা

Read Next

শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল, অনুপ্রাণন – ৪র্থ সংখ্যা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *