অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
নভেম্বর ২৮, ২০২৫
১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নভেম্বর ২৮, ২০২৫
১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনুবাদ : আকিব শিকদার -
অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিটসিন-এর দুটি কবিতা

রুশ কবি ও ঔপন্যাসিক অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিটসিনের জন্ম ১১ ডিসেম্বর ১৯১৮ সালে। সোলঝেনিৎসিনের জন্মের ছয় মাস আগে রুশ যুদ্ধে তার বাবা মারা যায়। মায়ের কাছে তিনি মানুষ হন। সোলঝেনিৎসিন পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন সাহিত্য নিয়ে। কিন্তু তার শহরের বিশ্ববিদ্যালয় সে সুযোগ ছিল না, তাই পড়াশোনা করলেন অংকশাস্ত্রে।

কোনো সাংঘাতিক বিষয়ও যে খুব সহজ করেই লেখা যায়, তার প্রমাণ রুশ কবি ও ঔপন্যাসিক অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিটসিনের গদ্য কবিতাগুলো। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবক্ষয় তার লেখার মূল প্রতিপাদ্য। তার উপন্যাস ওয়ান ডে ইন দ্য লাইফ অফ ইভান ডেনিসোভিচ (১৯৬২) তাকে বিখ্যাত করে তোলে।

সোলঝেনিৎসিন ১৯৭০ সালে নোবেল পুরষ্কার পান। তিনি কমিউনিজমের শাসননীতি পছন্দ করতেন না, ফলে তার দেশে তার লেখা বহুদিন নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৭৪ সালে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয় ও নির্বাসিত করা হয়। নির্বাসিত হয়ে তিনি আমেরিকাতে চলে যান। ১৯৯০ সালে তার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিলে তিনি জন্মভূমিতে ফিরে আসেন। ২০০৮-এর ৩ আগস্ট অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিটসিনের মৃত্যু হয়।

মাইকেল গ্লেনি অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিটসিনের কিছু কবিতা রুশ ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন।

কুকুরছানা

আমাদের বাড়ির পেছনের উঠানে একটা ছেলে

তার পোষা কুকুর ছানা বেঁধে রাখে, যার নাম ছিল শারিক।

তুলোর মতো তুলতুলে একটা বল কুকুরটার সঙ্গী, সেই ছোট্টবেলা থেকে।

একদিন আমি তাকে মুরগির কিছু হাড়গোড় খেতে দিতে এলাম

যা ছিল উষ্ণ, সুস্বাদু এবং গন্ধমাখা।

ছেলেটা অসহায় কুকুরটার গলার শিকল খুলে শুধু উঠোন জুড়ে ছুটতে দিল

উঠোনে তুষার ছিল, পাখির পালকের মতো গভীর তুষার।

শারিক খরগোশের মতো লাফালো প্রথমে তার পেছনের পায়ে,

তারপর তার সামনের পায়ে, উঠোনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে,

সামনে পেছনে, বরফের ভেতর মুখ গুঁজে রাখে।

সে আমার হাতের কাছে ছুটে এল, তার গায়ের লোম সব এলোমেলো,

আমার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল, হাড়গোড় শুঁকে আবার চলে গেল,

তার পেটের ভেতর খিদে।

তবু সে বলল, তোমার দেওয়া হাড়গোড় প্রয়োজন নেই আমার।

আমাকে শুধু আমার স্বাধীনতা দাও…

 

আইসক্রিমের দোকান

মন্টি আর মার্শাদের আইসক্রিমের দোকান।

দোকানে ওরা নানান রঙের আইসক্রিম সাজিয়ে রাখতো ফ্রিজে।

লাল, সবুজ, হলুদ বরফখণ্ডগুলোতে জিহ্বা ছোঁয়াতেই

হৃদয় শীতল হতো।

আমাদের হৃদয় এখন আর শীতল হয় না,

মন্টিদের সে দোকান এখন নেই।

আমাদের শৈশবও হারিয়ে গেছে। যদিও লাল, সবুজ, হলুদ

আইসক্রিম দেখে মনে পড়ে ছোট বেলা।

Read Previous

কান্তু কবিরাজ

Read Next

ছড়া কি শিশুসাহিত্য?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *