এখনো আনত, গুরু অগস্ত্য সেই যে পা বাড়ালে
দক্ষিণা পথের দিকে ফিরে আসবে কি আর?
তুমি তো জানো উদ্ধত সূর্যকেও আমি ঢেকে দিতে পারি
সমতল থেকে ফণা তুলে তুলে নিরন্তর ঊর্ধ্বগামী
শঙ্কিত বিশ্বের ষড়যন্ত্রে তুমিও তবে নাড়াবে তর্জনী?
কোথায় সে সুমেরু পর্বত? বিন্ধ্য আজ বিশ্বময়
বিনয়ের অবতার, দেখো বৃত্তবন্দি সূর্যদেব
ভূপৃষ্ঠ থেকে উত্থানমন্ত্র জপে জপে কতদূর
যেতে পারে পৃথিবীর পাখি? যতটা তারার আলো
আকাশকে করে তোলে পতঙ্গের অগ্নিকুণ্ড
ততটা আগুনখুদা বুকে নিয়ে দাঁড়িয়েছি দূরে
পদমূল মৃত্তিকায় প্রোথিত, উন্নত শির আকাশচুম্বী
উদিত সূর্য আমার চোখের সামনে ম্লান হতে হতে
পৃথিবীকে শোনায় অনন্ত রাতের কাসিদা
সূর্যের কৃপাবঞ্চিত চাঁদ রূপকথার প্রবাদপ্রতীম অভিধা
ভুলে ডুবে যায় অন্য এক রাতজলসায়
তোমার পায়ের স্পর্শে তবু ভাঙেনি ধুলোর ঘুম
ঘাসের শঙ্কিত ডগা হতে কত কত সূর্য শুষে নিল
ভোরের কুহক, উষ্ণতার অভিধায় রাগী চোখে গ্রীষ্ম
কত তাকিয়েছে ক্ষরণপ্রবণ বর্ষাভিলায়
মাথা তুলে দাঁড়াবার কথা ভেবেছি ক্বচিৎ
আপ্ত গুরুবাক্য শিরোধার্য জেনে তাকিয়েছি মৃত্তিকায়
আকাশের রঙ বদলানোর চিরাচরিত ভঙ্গি ভুলেছি
কবে, পৃথিবী আমার সামনে দলিত ধুলোরূপে
দণ্ডায়মান, অথচ চিরকাল আকাশমুখী কত কত
তারকার হাতছানি উপেক্ষার তুড়িতে উড়িয়ে
সুতোকাটা ঘুড়ি হয়ে পতনের ধ্বনি শোনার অপেক্ষায়
কান পাতি নিজের ভেতর, কখনো চমকে ওঠে
দহনের আদিম স্বরে মেলাই ক্ষয়ে যাওয়া সুর
ভেতরের কোনো এক লুপ্ত পাহাড় এখনো
নতুন জন্মের প্রতীক্ষায় ভ্রুণরূপে বেড়ে ওঠে
মাতৃজরায়, আদিম চেতনার পোকা জোনাকির আলো
ধার করে উলুবনে মুক্তো ছড়ায়, নিজেকে
ভাঙতে গিয়ে থমকে দাঁড়াই, যদিও
স্থবিরতাই নিয়তি, চিতার ধাবমান ভঙ্গির
দৃশ্যাবলি গেথে রেখে আগামীর চোখে
আবার দাঁড়াই উঠে প্রবল সূর্যের অভিমুখে
এবার ফিরে এসো প্রণম্য গুরু হে অগস্ত্য
সম্ভাবনার বাঁকানো শিরদাঁড়া টান টান করে
রক্তে শিরায় জাগাই আবার অগণন ডানার সত্তাসূর্য…