অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
জুলাই ১৩, ২০২৫
২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
জুলাই ১৩, ২০২৫
২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাজিম  খোকন -
আচানক একটি বা অজস্র বুলেটে

আচমকা একটি বুলেট বা অসংখ্য বুলেট ছুটে আসুক

নিমিষেই ঝাঁঝরা করে দিক বুক মাথা এবং সমূহ শরীর

একটি বুলেটে আচানক ছুটে আসুক

জানবার আগেই জেনে যাই— আমি আর জীবিত নই

মৃত হয়ে ডানা মেলে উড়ে যাই ইচ্ছে যেথায়

আর বায়বীয় দূর হ’তে চেয়ে দেখি কেবা কোথায়

কেমন দশায় হাসে গায় নাচে আর কেঁদে যায়

অথবা বলে শ্লা নিয়েছে বিদায়, কম্ম সারা

একটি বুলেটে জীর্ণ বিদীর্ণ হোক এই নুলো ধুলো

অকারণ দেহ, পোকায় খাওয়া খুটে খাক রক্ত পুঁজ

মগজ শেষে হাড়ও

একটি বুলেট হঠাৎ অজান্তে বিঁধুক আমার দেহে

বা অসংখ্য অজস্র বুলেটে ঝাঁঝরা হোক দেহ ও পাঁজর

খুলি উড়ে গিয়ে পড়ুক নদীর ওপারে

আর ধূলির আস্তরণে ঢেকে যাক শবদেহ

ময়নাতদন্তের পর হসপিটালের লাশ রাখা ডিপ ফ্রিজে

কিছুকাল হিম শক্ত হয়ে পৌঁছে যাই ডিসেপসন টেবিলে

সেখার প্রয়োজনে কাটুক ছিঁড়ুক দেখে নিক সব

যা অবশিষ্ট আমার

কেবল রোগ ব্যাধি অভাব অনটন চোখরাঙানি অপ্রেমগুলি

উবে গিয়ে মিশে যাক অন্ধকারে বাতাসের ওপারে বাতাসে

আকাশ নেই তবুও ঊর্ধ্বতার প্রান্তসীমায় এইটুকু বাদে

বাতাসের ভেতর থেকে দেখি কেমন কাটে শল্যচিকিৎসক

আর দেহাভ্যন্তরের ভেতরের তুমুল  অন্ধকার

কেমন খেলা ক’রে এনাটমির হাতে ছাত্রদের কল্যাণে

একটি বুলেটে বা প্রয়োজনে অজস্র বুলেটে বিদ্ধ হবার পরে

তারাই নিয়ে যাক এ দেহ যাদের এ দেহের যা প্রয়োজন

চোখ ত্বক কিডনি লিভার মজ্জাসহ বিজ্ঞানে বলা

প্রয়োজনীয় কাজে

নিজে নিজে বা স্বমৃত্যুতে বড় ভয় পাই সাহসী ও পাগল উন্মাদ

নই যখন, যদি উন্মাদ হতাম কবে ঝুলে পড়তাম

মগডালে বা ঘরের তীরবর্গার সাথে

যেহেতু এ দেহের দর শূন্যেও নেই, ভয় পাই মৃত্যু কষ্ট বিষাদে

অথচ কিছু মানুষ পাগল উন্মাদ তারা মৃত্যুকেই প্রর্থনা করে

স্বর্গ বা বেহেস্ত বিলাসের আকাঙ্ক্ষায়

তারা তাদের মতো প্রার্থনা করুক স্বর্গ বেহেস্ত বা নগণ্য থেকে

শ্রেয়তর আদরে, তারা তাদের মতোই থাকুক

একটি শালিক ধুলোরঙা বা কফি কালারের আহা টুকরোগুলি শুঁকে শুঁকে খেয়ে নিক

একটি বা  অজস্র বুলেটে বিদ্ধ যে শরীর

জানতে যেন না পারি উপলব্ধি বা সন্দেহও যেন না জাগে

একটু পরে একটি বা অজস্র বুলেট পৌঁছে দিক

শান্তিময় দিগন্তপ্রসারী অনন্তে

আচানক একটি বুলেট বা অজস্র বুলেটের আঘাতে আমিও

চলে যাই অনন্ত অজানায় আপাতত সুখে

এই হাপিত্যেসের অবসানে চলে যাই

অনন্ত থেকে অনন্ততরে

এ হাত তখন মুষ্টিবদ্ধ আগুন হাতে নিয়ে পরাজিত নই

জীবনের কাছে

কেবল একটি বা অজস্র বুলেট ছুটে আসুক ঝাঁক ঝাঁক।

সফেদ পায়রা হয়ে, আর জুড়াক দহনের জ্বালা

অজানা কেউ ছুড়ুক সেই বুলেট বা বুলেটসমূহ

ঝাঁঝরা হোক বুক পেট অণ্ডকোষ আর খুলে উড়ে যেয়ে

পড়ুক কোনো এক কোজাগরী রাতে

আর সেদিনের প্রকাশে অঙ্গপ্রতঙ্গ লাগাক চিকিৎসকেরা

প্রয়োজনীয় কাজে

এবং স্কেলিটনটি ঝুলিয়ে রাখুক গবেষণা ঘরে

অচানক একটি বা অজস্র বুলেটে ঝাঁঝরা করুক

অচেনা কোনো এক ভদ্রলোক

তাকে উপহার দেবার আগেই তখন আমি করিৎকর্মতার

ঊর্ধ্বে অন্য প্রহরে

একটি বা অজস্র বুলেটে

 

Print Friendly, PDF & Email

Read Previous

রূপান্তরের গল্পগাথায় কঠিন বাস্তবের আবরণে অতলান্ত বিষাদ

Read Next

রুদ্র সুশান্ত – যুগল কবিতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *