শৈলী নাম্নী
শৈলী নাম্নী তুমি,-মিথও তার ঊষামধ্যে সিঁদুরে মেঘ। একটি গাধার অনন্তে বিরাজমান হতে হতে স্বর্ণখচিত জল হতে বহুদূরে পরিনির্বাণে লুপ্ত হয়েছি। এই লুপ্ত হওয়া কি কোনো প্রশ্নের? বাঘিনি যাতনার? পশুপর্ব থেকে উত্তীর্ণ হয়ে, একবার হংসী-মানুষের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়েছি। একবার শামুকের শৃঙ্খলের প্রতি। মানুষেরা সর্পের স্নেহের মতো ক্রূর। লালসায় ঘেরা বক-বৃশ্চিক।
অর্জুমন্দা সোম
ঝরামুহূর্তগুলো- মিশে আছে- বেদে আর বুনোপদ্মের জঙ্গলে। একেকটি শিয়ালের পায়তারা আজ চূড়ান্ত কোনো স্খলিত স্বপ্নের দিকেই। আমার আত্মা বিগলিত; মর্মাহত পাথরের মতো স্তব্ধ আর; তাই কোথায় খুঁজেছো তাকে অর্জুমন্দা সোম? সংহারের জগতে? বিসর্জনের চিহ্নে ফুটে আছে তার লালিমাপৃষ্ঠের ঈষৎ আবহ।
শষ্পস্থলে
শষ্পস্থলে সমস্ত কারু, নৈশতা বিস্তৃত করেছিল এক অনাগত ব্যাধ। কে নিবে— শোক, পুষ্প আর চূড়ান্ত অসাড়তা? সময়গম্বুজের দিকে আমার দ্বন্দ্বে প্রসারিত বুদ্বুদে চোখ; তথাপি কোনো অস্তিত্ব, কোনো জড়তা, ডুবে যাচ্ছে ব্যাপৃত শালপ্রবাহে। আর আমি বিদীর্ণ প্রাণ এক, ক্রমে অন্ধকারে পরেছি ভেদহীন বল্কলপ্রভা।
সুড়ঙ্গ হতে ধূলি চিরন্তন
প্রথমে কাজুবাদামের বৃষলী পথ, তারপর একাকী, সুড়ঙ্গ হতে বেরিয়ে আসে কালো গোলাপের বিদূষিত চোখ। যতো আঁধার এসেছে বিরহ কাঁপাতে, যতো ধুলো আজ মথিত করেছি— প্রশ্ন কী তাই রিক্ত হবে? করুণ, ঘোড়াপদতলে সমীহ? আমার সব রূপকথা, কান্তিময় আলেখ্য ছড়িয়েছি বিদ্রব প্রদীপের পাথরে। এসো ভগ্ন আর ভঙুরের— প্রতীয়মানতা দেখো; অভিশাপ তাই অধর চেপেছে।
অনিমেষ প্রাচ্য : জন্ম ২৬ জুন, বরিশাল। সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ (বরিশাল), বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যয়নরত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : গোলাপ ও আফিমের প্রজ্ঞা।