অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
জুলাই ১, ২০২৫
১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
জুলাই ১, ২০২৫
১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষমা মাহমুদ -
ক্ষমা মাহমুদ-এর গুচ্ছ কবিতা

প্রগলভ সময়

কোনো কিছুই ভাবায় না তোমাকে
নাড়ায় না
তাপায় না
এ এক ভালোই
এড়িয়ে যাওয়া, পালিয়ে যাওয়া
হ্যামলেট?
আনমনা, নিমগ্ন তুমি, তোমাতেই।।

চেয়ে চেয়ে দেখা
ভেসে ভেসে যাওয়া
তুমি অদ্ভুত, সময়!
অবাধ্য ইকারুস
নেমে আসো প্রবল বেগে
চপল, প্রগলভ
অতঃপর গলে গলে যাওয়া…

যে তুমি নার্সিসাস

শুধু নিজেকেই দেখছ
দেখছ দেখছ দেখছই!
রাস্তায়, ভিড়ের মধ্যে, শপিংমলে,
অচেনা মানুষের হাত ধরে,
সব জায়গায়, সবকিছু ভুলে গিয়ে
শুধু নিজেকেই দেখছ
নার্সিসাস!

দেখ না তুমি!
ফুল ফোটে, পাখি শিস দিয়ে গান গেয়ে যায়
সবুজ পৃথিবীর বুকে
বিশাল ডানা মেলে চিল ভেসে বেড়ায়
অসীম নীলিমায়-

তুমি শুধু মগ্ন হয়ে আছ
জলের উপর নিজের প্রতিবিম্বে!
তোমাকে ডেকে ডেকে হারিয়ে যায় প্রতিধ্বনি
সবুজ বনে, অব্যক্ত বেদনায়, তবু
ফেরাতে পারে না তোমাকে সম্বিতে!

তুমি শুধু তোমাকেই দেখে যাচ্ছ
দেখছ দেখছ দেখছই!
দেখতে শুধু পাও না
জলে একটু নাড়া পড়লেই
হারিয়ে যাবে তুমি মুহূর্তেই…
রয়ে যাবে বাকি
আর যা কিছু আছে সব…

৩.
ওফেলিয়া

চেয়েছিলে যেমন
হলো নাতো কিছুই তেমন
ওফেলিয়া- প্রিয় ওফেলিয়া!

শুধু অকারণে, অযথাই
নিজেকে ডোবালে- জলের কবরে,
কেন যে! শেয়াল আর শকুনের খাদ্য হয়
মানুষের হৃদয়!

ভেবেছিলে ক্যানভাসে
রঙতুলি দিয়ে
মনের মাধুরী মিশিয়ে রাঙাবে!
রঙগুলো যে প্যালেটে সব মিশে একাকার-
আহা! যদি তা জানতে!

যে জলে ডুবেছ তুমি
পেয়েছ কি খুঁজে
জীবন খুঁড়ে চলা শান্তি সেখানে?

ব্যাখ্যাতীত অনেক কিছুই
ভাষার সাধ্য কি তা প্রকাশের!
জীবনের অপার রহস্যের-
এ বুঝি তেমন কিছু!!!

লিথী নদীতে স্নান
বদলে কি দিতে পারে
এ জীবনের মানে?

৪.

চেতনার স্রোত

রাশি রাশি পিঁপড়ার মতো
ভিড় করো মনের গহীনে,
এত কেন আসা-যাওয়া
অন্তহীন, নিষ্ফলা?

অতীত, বতর্মান আর ভবিষ্যতে
অবিরাম ঘোরাফেরা
কখনও আশা-
কখনওবা শুধু, দীর্ঘশ্বাস!

কখনওবা ফিরে পেতে চাই তোমাকে
ভস্ম থেকে জ্বলে ওঠা
ফিনিক্সের মতো-

আজন্ম আশায় বসবাস
মনেৱ গহীনে লালিত
এক চিলতে বিশ্বাস-

হয়ে যাও যদি তুমি
আলাদিনের জাদুর চেরাগ!

৫.
মুখোশ

মুখোশ নৃত্য- চতুর্দিকে
যেনবা একেকজন
নিপুণ ‘কাবুকী’ শিল্পী!

অপার আনন্দ মুখোশে!
বিরামহীন অভিনয়
সত্য ফুটিয়ে তোলার
ক্লান্তিহীন প্রয়াসে…

দর্শক আমি একা-
দুঃশাসনের পাশা খেলা সভায়
বস্ত্রহরণকালে
দ্রৌপদীর মতো একা।

মুখোশ- এ বুঝি
ট্রয়ের কাঠের ঘোড়া!
দরজা খুলতেই ভিতর থেকে
ভিসুভিয়াসের হলকা আগুন-

আর তারপর? পম্পেই চুরমার,
ট্রয় পুড়ে ছারখার!
অসহায় রাজা প্রায়াম!
আমিই তো…

চোখের সামনে পোড়া ট্রয়, প্রিয় ট্রয়…

Print Friendly, PDF & Email
ক্ষমা মাহমুদ

Read Previous

এলিজা খাতুনের গুচ্ছ কবিতা

Read Next

নিঃশব্দ আহমেদের গুচ্ছ কবিতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *