
ছায়া
আমাদের বাগানে এবার আম গাছে আম নেই, লিচু গাছে লিচু নেই। শুধু সবুজ পাতাগুলো আকাশ হয়ে বসে আছে। মা বললো, গাছগুলো রেখে আর লাভ নেই, কেটে ফ্যাল। অতঃপর আমি গাছের ছায়ার কাছে যাই। কোদাল দিয়ে ছায়াগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে, সার দেই, বিষ দেই, জল ঢালি। মাকে বলি, যতœ করে ছায়াগুলো রেখে দিলাম এবার। আগামী দিনের পৃথিবীর জন্য।
২৯ এপ্রিল/২০২২
রয়েল বেঙ্গল টাইগার
বৈশাখী মেঘ আর তপ্ত দুপুরের লুকোচুরি খেলা। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো বোরো ধানের সোনালি খেতে লাফিয়ে পড়লো রোদ। আকাশে যতো সময় রোদ থাকে, কৃষক কবিদের মতো ধানকাব্য রচনা করে। আর মেঘ দেখলেই ঝড়ের কথা মনে পরে, শিলাবৃষ্টির কথা মনে পরে, বজ্রপাতের কথা মনে পরে। তবুও সব উপেক্ষা করে, বৈশাখে মাঠে মাঠে ধান উৎসব চলে- রয়েল বেঙ্গল টাইগার শিবিরে।
২৩ এপ্রিল/২০২২
আয়না
আয়না আবিষ্কারের পূর্বে আমাদের পরিচয় পর্ব ঝুলে ছিল দীর্ঘদিন। তবুও ইদানীং মনে হয় আমরা এখন লাশ। একদিন আমাদের ময়নাতদন্তের পর কবরস্থানে পাশাপাশি থাকার বন্দোবস্ত করলো আদালত। অতঃপর হাত ধরাধরি করে হেঁটে বেড়াই আমরা। এক নক্ষত্র থেকে আরেক নক্ষত্রে ঘুরে বেড়াই। নিজেদের আয়না ভেবে মুখ দেখাদেখি পর্বটা সেরে নতুন করে সময়ের কাঁটা অতিক্রম করি।
প্রিয়তমেষু
ব্যবচ্ছেদ রেখা চেনো নিশ্চয়। অসম বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করার পর যেমনটা মনে হয়। অথচ আমার জন্য কেবলি পড়ে আছে অসংখ্য দীর্ঘশ্বাস। তারপরও রাতের তারার মতো তাকিয়ে থাকি। আমার না ঘুমানো বেদনার কারখানায় শুভ্র মেঘ। অথচ তুমি বললে, ইদানীং ঘুমের ঔষধ ছাড়া ঘুম হয় না তোমার। কেমন যেন লাগে। কিছু একটা যে হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে পারো না। ছায়ার সাথে লুকোচুরি খেলো। অতঃপর তোমার চোখের বৃষ্টি-বাড়িতে বন্যা বয়ে যায় ।
নস্টালজিক ভাবনাগুলো
কখনও কখনও মনে হয় নিজেকে ছাড়িয়ে যাই। দেহ থেকে মন থেকে সর্বোপরি চেনা পথ মাড়িয়ে যাই। পিছনে পরে থাকুক যতো অভিমান। গন্ধভাদালের বন চেয়ে দেখুক। খাঁচায় বন্দী পাখির পালক হবো না কোনোদিন আর । বাঁশবাগান আর ইউক্যালিপটাস বনে হাত বাড়িয়ে আকাশে ফিরে যাওয়ার নাম, সবুজের খাতায় লেখা হবে না কোনোদিন আর। দুরন্ত রাঙা অভিসারে মেতে উঠুক নস্টালজিক ভাবনায় সব প্রেমিকারা। তুমি শুধু একদিন জানবে, তোমাদের কোষ তরঙ্গে আমি গেছি মারা।
২১ মার্চ /২০২২