রোকে ডালটন লাতিন আমেরিকার অন্যতম শক্তিশালি বিপ্লবী কবি, যাঁকে চে গুয়েভারার পরেই স্থান দেয় লাতিন বিশ্ব। তাঁর জন্ম ১৯৩৫ সালে, সালভাদরের এক উচ্চবিত্ত পরিবারে। ১৯৫৫ সালে তিনি কম্যুনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫৯-৬০ এ কৃষক অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশ নিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন। তাঁর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে স্বৈরাচারী একনায়ক সরকার। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ফাঁসির দিনেই সেই স্বৈরশাসকের পতন ঘটে, আর তিনি বেঁচে যান। ১৯৬১-তে দেশত্যাগ করে মেক্সিকো চলে যান। সেখানেই তাঁর কাব্যপ্রতিভার বিকাশ ঘটে। এরপর তিনি চলে যান কিউবা এবং লাতিন আমেরিকার একজন অন্যতম প্রধান বিপ্লবী কবি হয়ে ওঠেন। কিউবা থেকে যান প্যারাগুয়ে, সেখানে তাঁর রাজনৈতিক বক্তৃতা অনেককে চমৎকৃত করে।
১৯৬৫-তে ফিরে আসেন দেশে। সশস্ত্র বিপ্লবে অংশ নিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৭৫-এর ১০ মে, বিপ্লবীদের মধ্যে চলা এক আন্তঃসংঘর্ষে।
কেবল তো শুরু
আমার সুহৃদ, এক সম্ভাব্য কবি,
মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীর হা-হুতাশকে
এভাবে করলেন চিত্রায়িত:
‘আমি তো বুর্জোয়ার কয়েদবন্দী,
তাছাড়া আমি আর কীই-বা হতে পেরেছি।’
এদিকে মহান বের্টোল্ট ব্রেখট,
কম্যুনিস্ট, জর্মন নাট্যকার ও কবি
(পদবিক্রমটা ঠিক এমনি) লিখেছিলেন:
‘ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অপরাধের তুলনায়
ব্যাংক ডাকাতি তেমন কি আর মন্দ কাজ?’
এ থেকে আমি যে উপসংহার টানি, তা দাঁড়ায়:
নিজেকে অতিক্রম করতে গিয়ে
যদি মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী
ব্যাংক ডাকাতি করেই ফেলে
তবে বলতে হবে সে তেমন কিছুই করেনি
কেবল নিজেকে একশ’ বছরের ক্ষমা
পাইয়ে দেওয়া ছাড়া।
লাল বিপ্লব
পাখিরা উড়ে যায়, রাঙা বিপ্লব ছড়িয়ে যায় চারপাশে-
রক্ত সবসময়ই লাল, লাল ডুবে যাওয়া সূর্য
বারুদের আগুনও লাল, ঈগলের ঠোঁটের আঘাতে
যে রক্ত বেরিয়ে আসে জংলি মেসের পিঠ থেকে-
লাল, শুধু লাল।
ডুবে যাওয়া সূর্যের দোহাই, জ্বলে ওঠা বারুদের দোহাই
আমাকে তোমরা ঈগলের মতো হিংস্র হতে বলো না-
মেসের চামড়া উৎপাটনরে মতো তোমাদের
বিপর্যয় ডেকে আনতে যেও না।
আকিব শিকদার
শিকদার নিবাস
৮৪২/২ ফিসারি লিংক রোড
হারুয়া, কিশোরগঞ্জ।
Email : akibshikder333@gmail.com
রচিত বই :
কাব্য গ্রন্থ : কবির বিধ্বস্ত কঙ্কাল (২০১৪), দেশদ্রোহীর অগ্নিদগ্ধ মুখ (২০১৫) কৃষ্ণপক্ষে যে দেয় উষ্ণ চুম্বন (২০১৬), জ্বালাই মশাল মানবমনে (২০১৮)।
শিশুতোষ : দোলনা দোলার কাব্য (২০২১)
আকিব শিকদার। জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানাধীন তারাপাশা গ্রামে, ০২ ডিসেম্বর ১৯৮৯ সালে। প্রফেসর আলহাজ মোঃ ইয়াকুব আলী শিকদার ও মোছাঃ নূরুন্নাহার বেগম এর জ্যেষ্ঠ সন্তান। স্নাতক পড়েছেন শান্ত-মরিয়ম ইউনিভার্সিটি থেকে ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ে। পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর। খন্ডকালীন শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু; বর্তমানে কর্মরত আছেন- আইয়ূব-হেনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে।
কবির বিধ্বস্ত কঙ্কাল (২০১৪), দেশদ্রোহীর অগ্নিদগ্ধ মুখ (২০১৫), কৃষ্ণপক্ষে যে দেয় উষ্ণ চুম্বন (২০১৬), জ্বালাই মশাল মানবমনে (২০১৮) তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। দোলনা দোলার কাব্য (২০২১) তার শিশুতোষ কবিতার বই।
সাহিত্য চর্চায় উৎসাহ স্বরুপ পেয়েছেন “হো.সা.স. উদ্দীপনা সাহিত্য পদক”, “সমধারা সাহিত্য সম্মাননা”, “মেঠোপথ উদ্দীপনা পদক”, “পাপড়ি-করামত আলী সেরা লেখক সম্মাননা”। লেখালেখির পাশাপাশি সঙ্গীত ও চিত্রাংকন তার নেশা।