ধাক্কা
অনেক ভ্রমণ শেষে
বহনকারী গাড়িটা তো কড়াব্রেক করেনি
অকস্মাৎ কেন তবে আহামরি ধাক্কা
আমি কি ফিরে এসেছি আমার গ্রামের কোলে
নাকি পৃথিবী ঘুরবে না আর সূর্যের চারপাশে
কে যেন জাপটে ধরেছে আষ্টেপৃষ্ঠে
মনে হচ্ছে, সে আমার জন্মান্তরের চেনা
নাসিকায় নিজবাহু ছোঁয়ালে আজও
তার আলিঙ্গনের তীব্র ঘ্রাণ উঠে আসে
সেই কৈশোর-প্রেয়সী বুঝি এতদিন পর
ছল করে এইভাবে চমকে দিলো
তবে কি সে আজও রয়ে গেছে তেমন—
যেমন ছিল একদিন— বহুদিন আগে—
আমাদের সুখী-সুন্দর গার্হস্থ্যজীবনে?
এখন তো স্বাভাবিক বর্ষা নেই আর
স্নানের সময় তাকে নিশ্চয়ই
কোনো না কোনো নদীর কাছেই যেতে হয়।
এবারও ব্যত্যয় হলো না
বাহনের চক্রগুলো স্টেশন ছোঁয়নি
এখনই কী নিশ্চেতন-করা-গন্ধ বাতাসে!
জয়বাংলা পেরিয়ে ঝাটুরদিয়া নামলেই
সম্মুখে পড়বে আরও জল মাঠ গ্রাম;
আপন গ্রামের পথে যেতে যেতে
আরও কী দশায় যে পাবে…
বদ্ধজলেতে জাগানো এ-ব্যাখ্যাতীত ঘ্রাণ
অতীন্দ্রিয় বোধে
প্রতিবার
এইভাবে জেগে-ওঠা;
জেগে-ওঠা না-কি অগোচরে
এমন কি নিজেরও অজান্তে
শ্রাবণধারার মতো স্মৃতির
অঝোর বৃষ্টির মধ্যে নিরঙ্কুশ ডুবে-যাওয়া…
যতই ভ্রমণ হোক ঘুমঘুম ঢুলুনির দেশে
অচেনা যাত্রীর কাঁধে ঢলে পড়ুক মাথাটা
তোমার বাড়ির কাছে আসতে-না-আসতে
আমূল জেগে ওঠে আমার ইন্দ্রিয়পাড়া
প্রতিটি বর্ষায়; এবারও ব্যত্যয় হলো না।