অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
অক্টোবর ১৮, ২০২৪
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অক্টোবর ১৮, ২০২৪
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাহবুব আলী -
বিব্রতকর আলাপ-প্রলাপ

নেতার মিটিং শেষ হলে যখন তার সামান্য করুণার কাঙাল মানুষজন বিরিয়ানির প্যাকেট সাটাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে, খালিদ বাবু সবই বোঝে, অজানা নয় কিছুই, একদিন তেমন দিন পেরিয়ে এসেছে সেও, এখন দেখে দেখে বেশ মজা লুটে নেয় আর তখন বাইরে ব্ল্যাক পাজেরোর আড়ালে গল্প বা আলাপ-আলোচনা ইত্যাদি সুখকর বিব্রত প্রসঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড় করতে হয়। গেটের ভেতর দক্ষিণে বিদেশি কোনো গাছ বিশাল পাতা ছড়িয়ে ছায়া প্রগাঢ় করে তুলেছে। আকাশ ধুপছায়া, দু’একটি চিল অনেক অনেক উঁচুতে কোনো শিকারের নেশায় নিবিড় দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে নিচের জমি-বড়িঘর-ঝোপঝাড় দেখে যায়, তখন খালিদ বাবুর চারপাশে দু’একজন সতর্ক আর প্রগলভ কথা বলতে শুরু করে। সেই প্রসঙ্গ বিবিধ সুযোগ-সুবিধা আর গোপন-অগোপন ব্যবসায়িক লেনদেন আর রজনী পোহালো ভোর অভিসার কাহিনি, এখন আর এসব ভালো লাগে না; তবুও করতে হয়। বেঁচে থাকতে হলে সবকিছু পছন্দমতো করা যায়, নাকি করতে পারে, এমন তো হয় না; এন্টারটেইনমেন্ট বলেও একটি বস্তু আছে। খালিদ বাবু অদ্ভুত দোলাচলে নিজের মধ্যেই নিজের প্রতি বিবমিষার সবটুকু বিষ ঢেলে দেয়…দিতে থাকে; এও শালার কুত্তা জীবন।

আগেরবার নেতা খুব অসুখী হয়েছিল। মেয়েটি ছাব্বিশ-সাতাশ, ফিল্মের নায়িকার মতো পানপাতা দুখী দুখী বিষাদ চেহারা, উত্তুঙ্গ দীঘল স্তন, সবে রুমে গিয়েছে, কুড়ি মিনিট কি আধঘণ্টা, মোবাইল খুব জোর বেজে ওঠে। খালিদ বাবু প্রোফাইল সাইলেন্ট প্লাস ভাইব্রেট করে রাখতে ভুলে গিয়েছিল। আজকাল এমনই হয়। লালনের খুব চেনা এক সুর রিংটোন। সে তড়িঘড়ি রিসিভ শেষে কোনোমতো উচ্চারণ করে ওঠে।

‘জি স্যার?’

‘এ কাকে লইয়া আইছোস হারামজাদা?’

‘স্যার!’

খালিদ বাবু তখনো ঠিক বুঝতে পারে না, ঘটনা আসলে কী? জয়া খানম তো অতীব সুন্দরী। কারও মাথা হেলিয়ে দেওয়ার জন্য একটি হাসি যথেষ্ট। স্যার এমন শাসাচ্ছে, তিন পেগ মেরে দিলে টানটান হয়ে ওঠার কথা যার; তবে কি কোনো ঝামেলা হলো? ভায়াগ্রা কাজ করছে না? একজন মানুষ সে যত বড় নেতা-গোতা হোক, প্রতিদিন তো গুঁতা মারতে পারে না; গুঁতা মারতে মারতে জীবন-যৌবন সুতা হতে থাকে…হয়ে যায়। খালিদ বাবু আবার বিনয় বিগলিত।

‘স্যার?’

‘আ রে মাল তো দেখি দু’নম্বরি, ব্রেস্টফিডিং মাগি, ঘরে বেবি আছে। তোমারে কী কইছি? এ্যাহ্ মুখে-গলায় ধুশ্ শালা বাঞ্চোত!’

‘স্যার স্যার লিলি রে খবর দিমু, সেও কিন্তু রেডি…।’

‘আ বে রাখ্, তোর বইনে রে লইয়া আয় শালা।’

খালিদ বাবু চুপ করে যায়। নেতা মাতাল হয়ে গেছে। জয়া খানম বের হোক আগে, অবশ্য কত ভোর নাকি মধ্যরাত বের হবে কে জানে, বের হতে পারবে কি না, সেও এক সন্দেহবাতিক প্রশ্ন বটে। খালিদ বাবু বারবার সতর্ক করে দিয়েছিল,-

‘শোন তুরে মাতাল হওয়া চলব না, স্যার যেমন কইব তেমন খেলবি, দরকার হইলে ছত্রিশকলা, বুজচো?’

‘আমি তো খাই না। ছত্রিশ কি জানি কইলেন সেইডা কী?’

‘তুর বোঝনের কাম নাই। তুই স্যার রে খুশি করবি ব্যস।’

‘হ! বিল কি কামের পরে দিবেন?’

‘দশ হাজার।’

‘বাই একটু ধইরা দিয়েন। মানুষডার ক্যানসার। চেন্নাই যাওয়ার পাসপোর্ট ভিসা।’

‘পাবি পাবি স্যার খুশি হইলে প্লেনের টিকেটও পাবি।’

‘বখশিসের টিপস্ বাই।’

‘ভোররাতে আমার লগে থাকবি, ঠিক আছে?’

‘আইচ্ছা।’

খালিদ বাবু রাত তিনটার দিকে একবার দরজার কি-হোলে উঁকি মেরে দেখে জয়া খানম ঘুমিয়ে গেছে। বিবস্ত্র। এলোমেলো বিস্রস্ত চুল এলিয়ে আছে বেডের ধারে। নিতম্বের উপরে মধ্যখানে নীলচে-কালো গোলাকার জন্মদাগ। সন্ধেবেলায় তার বড় বিষাদ সম্মতি ছিল অথবা আদৌ কোনো ইতিবাচক উক্তি কিনা কে জানে; এখন সে অবশ্য এসব ভাবে না। স্যারও ফ্লোরে লুটিয়ে আছে। লুট গ্যায়ে হাঁ ম্যায় লুট গ্যায়ে। খালিদ বাবু আলগোছে মোবাইল টেপে। একবার-দুইবার। কাজ হয়। জয়া খানম ঘুম ঘুম ক্লান্তিতে মোবাইল হাতে তুলে খুব দ্রুত নিজেকে ঠিক করে নেয়। দরজার কি-হোল তো সামান্য ছিদ্র নয়, হাজার হাজার জানালার মতো ফাঁকফোকর; সবকিছু উদোম করে রাখে। মানুষ সব দেখেশুনেও কিছু বলতে পারে না। খালিদ বাবু নিজের রুমে নিতে নিতে রাত ভোর ভোর। তখন সেও বোঝে, আসলে মিথ্যে বলেছে মেয়েটি। তার স্তন দুটো চুষে খাওয়া পাকা আমের মতো ঝুলে আছে।

‘তোর দুধের বাচ্চা আছে বলিসনি তো?’

‘আপনি জিগাইছেন? নয় মাস বয়স।’

‘বাড়িত কে দেইখ্যা রাখে? ওর বাপের বুলে ক্যানসার।’

‘আমার ছোড বইন আছে।’

‘ছোট বইন? বয়স কেমন? সেয়ানা হইছে?’

‘আঠারো-ঊনিশ হইব মনায়। ও রে এসব কামে আনমু না। আমি নষ্ট হইছি হইছি আর কাউরে তেমুন নষ্ট হইতে দিতাম না।’

‘নষ্টের আবার কী আছে? কাম করবি, ট্যাকা পাবি, মজা তো তুইও লুটিস। স্যারে দেখি তোর বাঁট একেবারে খালি কইরা দিছে। তোর বাচ্চা খাইব কী?’

‘আমারে ধাক্কা মাইরা ফেলাই দিছিল। মানুষডা খারাপ।’

‘আমি কেমন? ভালা না? তোর বইনে রে লইয়া আয়। ওরেও ট্যাকা দিমু।’

‘না ভাইজান, আমি কি এইসব কাম করি? মানুষডার অসুখ।’

‘সে শালা মইরা গেলেই তো ভালা। নতুন বিয়া করবি।’

জয়া খানম আর কথা বলে না। সালোয়ার-কামিজ পরে নিতে থাকে। খালিদ বাবু ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে দিতে দিতে ভেবে নেয়, ব্রেস্টফিডিং মেয়ে-ছেলে; নেতা যে তাকে কী গুঁতা দেয় কে জানে। সকালে বাঁশ খেতে হবে নিশ্চয়। সব মিসফরচুন-ফরচুন। আ রে মাদার-ফাকার, মানুষের দুধ হলো সবচেয়ে পুষ্টি, আজকাল খেলোয়াড়রা শরীর ফিট রাখতে স্ট্যামিনা বাড়াতে হাজার ডলার খরচ করে মানুষের দুধ কিনে খায়। সেই সব মায়েরা দুধ বিক্রি করে পেটের বাচ্চাকে কৌটো ধরিয়ে দেয়। পরিবারের সকলের তিনবেলা খাবার জোটে। কি আজিব পৃথিবী!

আকাশ অন্ধকার হয়ে এসেছে। শরতের আকাশ এমন, নীল নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, কখনো আকস্মিক ছায়া ছায়া মেঘ এসে একঝলক বৃষ্টি, সবকিছু ভিজিয়ে দেয়; তারপর আবার রোদ। পাজেরোর পাশে যে দু’জন দাঁড়িয়ে আছে, প্রাইভেট আলাপ শুরু হয়নি আর উভয়পক্ষ বেশ অস্থির-উদগ্রীব একটি ফয়সালা বা সিদ্ধান্তে আসার অপেক্ষায়, সেটা অবশ্যই হবে। নেতা এখন সার্কিট হাউস যাবে। সেখানে একটু ফ্রেশ হয়ে ঢেপা নদীর খাল খনন উদ্বোধন। বিকেলে লোকভবনে নাগরিক সমাবেশ। বিবিধ উন্নয়ন কারিশমা গিনেস বুক অব রেকর্ডসে তোলার কাজ। পা-চাটা কলমবাজ আছে। ক্যামেরা ক্লিক। চাকচিক্যের দুনিয়া। মানুষ সব বোঝে, সত্য-মিথ্যা, চাপা আর ভেতরের গোপন-অগোপন খবরাখবর; কিন্তু প্রকাশ পায় না। প্রকাশ করতে নেই। সব টাকায় কেনা যায়। ইনফরমেশন মেকস্ দ্য প্রিভিলেজড্ ক্লাস। খালিদ বাবুর কাছে এই একটি কথা বেদবাক্যের মতো সত্য। সেই স্কুলে ক্লাস এইট-নাইনে পড়ার সময় সাংবাদিকতার পাঠ। ক্রীড়া সাংবাদিক। শিক্ষানবিস। ওতেই দু-চারটি খেলার খবর স্থানীয় কাগজের পাতায় এলে চা-সিঙ্গাড়া-কচুরি থেকে শুরু করে যাতায়াত বিল আরও কত কি খরচ জুটে যায়। তারপর একসময় জাতীয় দৈনিকের জেলা প্রতিনিধি। সম্পাদক টেলিফোনে ঢাকার বাতাস কাঁপিয়ে বলে,-

‘খালিদ দু-চারটা কেস ধরতে পারলে কাজে মজা পাবে। তখন বেতন-ভাতা নিয়ে ঘ্যানঘ্যান-টেনশন করার অবসর পাবে না।’

‘জি ভাই।’

মানুষ মানুষের ফেলে দেওয়া জঞ্জাল থেকে টুকিটাকি টোকায়। ডাস্টবিনের মধ্যে বিকট দুর্গন্ধের মধ্যে কার কখন কোনটি ফেলে দেওয়া বস্তু অর্থমূল্য এনে দেয় বোঝা মুশকিল। সে সমাজের মধ্যে জঞ্জাল খোঁজে। বিবিধ দুর্গন্ধ হাতিয়ে টাকা আনে। টাকা হলো পুণ্য…টাকা হলো শক্তি। তারপর একদিন এই করতে করতে নেতার পিএ…প্রাইভেট অ্যাসিস্ট্যান্ট। জগতে প্রত্যেক মানুষের প্রাইভেট বিষয়-আশয় থাকে। গোপন-অগোপন জীবনযাপন। প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কামনা-বাসনা। নেতা কখনো খোশমেজাজি থাকলে সুখের তলানিতে ভাগ বসানো যায়। চায়ের কাপের নিচে কষাটে যা পড়ে থাকে, সেই তুলনায় জুসের তলায় পড়ে থাকা থকথকে জিনিস বড় স্বাদের।

মেয়ে দুটোকে পছন্দ হয়েছে। কলেজ-ইউনিভার্সিটির ছাত্রী। অন্যজন গৃহত্যাগী গৃহবধূ। একদিকে প্রয়োজনের বাস্তবতা, অন্যদিকে স্বর্গের হাতছানি। ইউরোপ-আমেরিকা হলো বেহেশত। মানুষজন ডিঙিতে করে সমুদ্র পাড়ি দেয়, জলে ডুবে হাঙরের পেটে যায়; নেতারা নয়ছয় আর টাকা পাচার করে দ্বিতীয় নাগরিক হয়ে বিলাসবহুল বাড়িঘরে সুখনিদ্রা যায়। এমনকি প্রধান বিচারপতিও। বিচারকের হাতে রক্তের দাগ। এদিকে কেউ ঝুলে গেলে মিষ্টি বিতরণ হয়, আনন্দ আর আনন্দ, ফুর্তির মিছিল; সেই মিষ্টি খেয়েছে খালিদ বাবু। চমচমের স্বাদ ভোলা যায় না। এর সবই চলমান রাজনীতির কৌশল। ম্যাকিয়াভেলি আধুনিক দর্শন। খালিদ বাবু নির্বিকার, কখনো ভালো লাগে না; বিশ্বকোষের মতো সবকিছু সামলাতে গিয়ে অকোষ ঝুলে পড়ে। মাথা ভার ভার লাগে। মাথাব্যথা আউলা। নিজেকে শতবার জুতোর বারী। তারপর, হ্যাঁ তারপর…ওই যে ছিল সেই। সে দৃষ্টি সরু করে তাদের দেখে। শরতের পটভূমিকায় কি সুন্দর! মারহাবা! আসলে…সেসব না হয় থাক।

আজিজুল নিয়ে আসে তাদের। তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী, নিবেদিত প্রাণ, রুটিহীন মানুষের রুটির জন্য অভিযাত্রা রাজনীতি, এমনই তো চাই, তেমনই হয়ে থাকে। গৃহহীন মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকে, মেঝেতে শুয়ে থাকে তিরিশ বছর আর দলবেঁধে মানুষজন হাউজিং প্লট মেরে দেয়; কত বাড়িঘর লাগে তাদের? নট আর নটির দুনিয়ায় খাও-দাও ফুর্তি করো। ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়াও। নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা চাই। পৃথিবীতে মানব সভ্যতার যত উন্নয়ন, যত শহরায়ন আর নগরায়ন, ততই ভেঙে পড়ে নৈতিকতা আর আত্মার বন্ধন। জীবনের চাহিদা সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের চেয়ে বিলাসব্যসনে মত্ত হতে বেশি চায়। এই তো হাজার হাজার বছরের সভ্যতা। আজটেক সভ্যতায় শতমানুষের বলি চড়ে, তারা তাদের নানান নেশা খাইয়ে জীবন আর অস্তিত্বকে বাতাসে ভাসমান বুদবুদ করতে পেরেছিল, তাই জন্ম আর মৃত্যু নিয়ে ভাবনা-দুর্ভাবনা-দুশ্চিন্তা ছিল না; সেই বোধটুকুও নেই। এখনো সেই মায়ান সময়ের মতো মানুষের বলি চড়ে, রূপ আর চিত্রপট ভিন্ন; এই তো মানুষের ইতিহাস। সভ্যতার অহংকার।

‘স্যার আমার একটা চাকরি খুব দরকার। বাবা প্যারালাইজড্, মা কিছু করতে পারে না, বড়ভাই সোয়েটার কারখানায় কাজ করে, তার পৃথক সংসার, ছোট ছোট দুটো বাচ্চা, আমি টিউশনি করি, মেসে থাকি, বয়স বেড়ে যাচ্ছে, বিয়ে হবে কি না, সংসার হবে কি না জানা নেই; আমার একটা কাজ চাই।’

‘শিওর…শিওর। বায়োডাটা দিছো? স্যার কী বলে? যা বলে…।’

‘জি স্যার। আজ সন্ধ্যেয় দেখা করব?’

‘লোকভবনে আসো।’

‘জি স্যার।’

লোকভবনে নাগরিক সমাবেশ শেষ হতে হতে রাত দশ-সাড়ে দশ। কয়েকজন সেন্ট্রি রাস্তায় বারবার এদিক-ওদিক ঘুরে ঘুরে দেখে নেয়। সন্দেহজনক কিছু আছে কি? বিপক্ষ দল…জঙ্গি? নেই নেই…সব ক্লিয়ার। তারা যখন এসে পুনরায় দাঁড়ায় কে বলে যে আকাশের কোনো পরী নয়। তাদের ডানা নেই মাত্র। পাজেরো চলে। একটির পেছনের সারিতে দু’জন পরী বসে থাকে। তাদের চোখ-মুখ অন্ধকার রাতের দেয়ালে অনেক উজ্জ্বল দেখায়। খালিদ বাবু ড্রাইভারের পাশে বসে আছে যেমন থাকে। সে জানে আর আরও একবার স্মরণের জানালা ঝালিয়ে নেয়। একজন কলেজে পড়তে পড়তে সব পাঠ চুকিয়ে এসেছে। অন্যজন বড় মায়াবতী। শাঈলির মতো অনেকখানি ঠিক, সেই গড়ন আর মুখচ্ছবি।

কত বছর হয় চলে গেছে সে। খালিদ বাবু কোনোমতেই আটকে রাখতে পারল না। তার কথা ভেবে কী হয়? সে আর ভাববে না। শাঈলি কানাডা যেতে চেয়েছিল। এখন কি কারও ঘরণী হয়ে আছে অথবা কী কে জানে; এত ভাবনার দরকার কি? আহ্ জীবন! জীবন এমন কেন? মানুষ মানুষকে বেঁধে রাখে। মানুষ মানুষকে বেঁধে রাখতে পারে না। তখন ড্রাইভার ক্যাসেট চালু করে দিয়েছে। মৃদু ভলিউমে গান বাজে।

‘কারণ এখান থেকেই দুটো কমলা কিনে বাড়ি ফেরে বিমলা, সারারাত্রির খেটে সে খরচা মেটায় তার পঙ্গু স্বামীর চিকিৎসায়।’

আর এদিকে রাত ক্রমশ প্রগাঢ় আর রহস্যময় হতে থাকে।

লেখক:
মাহবুব আলী
প্রভাষক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান)
(সাবেক সহকারী সম্পাদক: দৈনিক উত্তরা,
সহযোগী সমন্বয়কারী: মাসমিডিয়া ডকুমেন্টেশন অ্যান্ড রিসার্চ-সিডিএ,
সমন্বয়কারী: প্রজেক্ট প্রপোজাল অ্যান্ড ডনর লিংকেজ-এসপিপি,
কনসালটেন্ট: কাম টু সেভ কোঅপারেটিভ, দিনাজপুর)।
গণেশতলা, সদর, দিনাজপুর।

প্রকাশিত বই: ছোটগল্পের নির্মাণশৈলী (সাহিত্য ও সাংবাদিকতা)

 

Print Friendly, PDF & Email
মাহবুব আলী

Read Previous

আনতারা

Read Next

কষ্টের হাসি

One Comment

  • সমসাময়িক, ভাল লাগলো। অভিনন্দন প্রিয় লেখক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *