
এতিম মেয়েটি বেঁচে থাকার জন্য একদিন গ্রাম্য হাটের পাশে একটা হোটেল বসাল।
প্রথমে খদ্দের আসতে লাগল ধীরে ধীরে। এরপরে এল বানের জলের মতো। এভাবে খদ্দের আসতেই লাগল। আর দিন-দিন বাড়তেই লাগল খদ্দের।
সারাক্ষণ ভিড় লেগেই থাকত তার হোটেলটাতে। এতে আশপাশের তিন-চারটি পুরাতন হোটেল উঠে গেল! আরও কয়েকটি জোগাড়-যত্ন করতে লাগল ব্যবসা গোটানোর।
মেয়েটি নিজের মতো হোটেল চালাতে থাকে। আপনমনে একাকিনী সে সব কাজ করত।
লোকজন তার রান্নার সুখ্যাতি চারিদিকে আরও ছড়িয়ে দিতে লাগল। এতে মেয়েটি খদ্দের সামলাতে খুব হিমশিম খেতে থাকে। হোটেল বন্ধ করতে-করতে সকাল-সন্ধ্যা পেরিয়ে তার কখনো-কখনো রাতও হয়ে যেত। তবু গ্রাম বলে রক্ষা পেয়েছিল সে। কখনই গভীর রাত-টাত হত না।
একুশ বছরের যুবতী মেয়েটির হাতে টাকাপয়সা জমল বেশ। কিছুদিন পরে সে আপন মনে ভাবল, একটা বিয়ে করবে। ভালো দেখে একজন জীবনসঙ্গী খুঁজে নেবে এবার। আর হোটেলটাতেও একজন বিশ্বস্ত লোকের বড় প্রয়োজন।
একদিন সকালে দেখা গেল মেয়েটির হোটেল ফাঁকা পড়ে রয়েছে! সকালের নাশতাসহ কোনো রান্নার আয়োজন নেই সেখানে! এমনকি মেয়েটিও নেই!
সারাদিন তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না! কতদিন যাবত তার খদ্দেররা তাকে খুঁজে-খুঁজে হয়রান হল। পুলিশও এল একদিন। কিন্তু কিছুই হল না।
এরপর তাকে আর কোনোদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। গ্রামের লোকজন বলাবলি করে―কোনো নেকড়ে কিংবা হায়েনা তাকে ধরে নিয়ে গেছে। এই হায়েনাদের কেউ নাকি চেনে না!