অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
মে ৩, ২০২৪
২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মে ৩, ২০২৪
২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোজাম্মেল হক নিয়োগী -
মওলানা জালাল উদ্দিন রুমির খোঁজে তুরস্কে : একটি অনবদ্য ভ্রমণকাহিনি

প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই থাকে বিচিত্র খেয়াল, অনুসন্ধানের বিচিত্র ও নানামুখী পথ, জানার কৌতূহল এবং প্রত্যেক মানুষের রয়েছে নিজস্ব একটি জগৎ। সলো ট্রাভেলার ফাতিমা জাহান রচিত এবং অনুপ্রাণন থেকে প্রকাশিত ১৫২ পৃষ্ঠার মওলানা ‘জালাল উদ্দিন রুমির খোঁজে তুরস্কে’ ভ্রমণকাহিনি গ্রন্থটি পড়তে পড়তে ৫৭ পৃষ্ঠার শেষ স্তবকে এসে কিছুটা বিস্মিত হলাম এবং থমকে গেলাম তার ভ্রমণপিপাসার কৌতূহলের বিষয়টি জেনে। তিনি লিখেছেন,

‘মানুষ বেড়াতে গেলে স্মৃতিস্তম্ভ খোঁজে, কেউ খোঁজে বইয়ের দোকান বা অ্যান্টিকের দোকান বা নেহাতই কেনাকাটার স্থান। আমি নতুন জায়গায় গেলে খুঁজে বের করি কবরস্থান। এর চেয়ে শান্তিময় স্থান আর নেই, এর চেয়ে ভারী বাতাস আর হয় না, এর চেয়ে সত্য প্রকাশের জায়গা অন্য কোথাও আমি পাইনি।’

ভ্রমণকাহিনিতে এমন কৌতূহল সত্যি বিস্ময়ের বিষয় বলে মনে হয়। কয়েকটি কারণে বিস্মিত হতে হয় যেমন— পৃথিবীর সব মানুষের কবর দেওয়া হয় না, আবার প্রভাব-প্রতিপত্তিহীন মানুষ ছাড়া সাধারণ মানুষের কবরের অস্তিত্ব খুব বেশিদিন টেকেও না এবং আবার কবর মানেই জড় পদার্থ মাটি ছাড়া আর কিছু নয় তবু লেখক কেন এই কবরের অনুসন্ধান করেন? কী এর রহস্য। মহাজাগতিক রহস্যের সন্ধান করে মুনি-ঋষি-সাধকগণ যে অমর্তালোকের ঠিকানা খুঁজে আজীবন ধ্যানমগ্ন থেকেছেন এই গ্রন্থের লেখকও কি সে-রকম কোনো রহস্যে আচ্ছন্ন হয়েছেন? এই প্রশ্নের উত্তর এই গ্রন্থে সুস্পষ্ট না হলেও তিনি ঐহিক ও পারত্রিক জগতের মাঝখানে জীবনের এক অদৃশ্য মায়াবী মেলবন্ধন দেখতে চান স্বচ্ছ মানবতার আতশ কাচের মতো, উপভোগ করতে চান ফুলের মতো সুন্দর ও পবিত্রতায়। হয়ত এ-কারণেই বইটির নামকারণও করেছেন পৃথিবী বিখ্যাত একজন মানবিক ও আধ্যাত্মিক পুরুষ মওলানা জালাল উদ্দিন রুমির নামে।

ভ্রমণকাহিনিটির সূত্রপাত হয় ইস্তামবুল শহরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে এবং শেষও হয় ইস্তামবুল শহর থেকে প্রস্তানের মধ্য দিয়ে। ইস্তামবুল শহরে প্রবেশ করার পরই পাঠকের মনে ওরহাম পামুকের ‘একটি শহরের স্মৃতিচারণ’ ইস্তাবমুল বইটির কথা মনে পড়তে পারে এবং যেসব পাঠক বইটি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তারা নতুন করে ইস্তামবুলের রূপ ও বর্ণনা এই গ্রন্থে দেখতে পাবেন। প্রথমেই তিনি শুরু করেন সুলতান আহমেদ স্কয়ারের বর্ণনা দিয়ে এবং দ্বিতীয় দেখার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক স্থাপত্য আবে সুফিয়ার আকর্ষণীয় ফটোগ্রাফসহ ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ও স্থাপত্য-নকশা ও কারুকাজের নিখুঁত বর্ণনা পাঠককে চমৎকৃত করে। আবে সুফিয়া প্রথমে গির্জা থাকলেও পরে অটোমান সাম্রাজ্যের সময় এটি মসজিদে রূপান্তরিত হয় এবং পরবর্তী সময় মিউজিয়ামে রূপান্তরিত হয়। আবে সুফিয়া ঐতিহাসিক স্থাপনাটি পৃথিবীর বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। এই পাণ্ডুলিপি তৈরি হয়েছে হয়ত ২০২০ সালের আগে। এজন্য ২০২০ সালের ১০ জুলাই তুরস্কের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে ৮৬ বছর পর আবার মসজিদে রূপান্তরিত হয় যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি লেখক উল্লেখ করেননি। পরবর্তী সংস্করণে হয়তো লেখক এই তথ্য সংযোজন করবেন।

সুলতান সুলেমানের রাজত্বের ইতিহাস, রক্ষিতার রেওয়াজ পাঠককে মনে করিয়ে দেয় মোগল সাম্রাজ্যের কথা। সুলতান সুলেমান নিজের পাঁচ পুত্রকে পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন। হয়ত তিনি যদি এই নির্দেশ না দিতেন তাহলে হয়ত তাঁকেও সম্রাট শাহজাহানের ভাগ্য বরণ করতে হত। শাসককে কখনো নির্মমও হতে হয়।

তোপকাপি প্যালেসের পাশে রক্ষিতা, দাসী ও হাবসি ভৃত্যদের কক্ষগুলোর বর্ণনা মানবসভ্যতার কলঙ্কতিলক ছাড়া আর কী? নির্মমতার শিকার হাবসি ভৃত্যদের নির্বীজিত করার কাহিনি হৃদয় বিদীর্ণ হতে বাধ্য।

তোপকাপি প্যালেসের সবচেয়ে, বিশেষ করে মুসলমানদের কাছে আকর্ষণীয় বিষয় হল সুলতানের ব্যক্তিগত সংগ্রহশালাটি। এই সংগ্রহশালায় হজরত মুহম্মদের (সা.) চুল, দাড়ি ও দাঁত মোবারকসহ কয়েকজন নবী, রাসুলের ও সাহাবির ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিসপত্র। এই অধ্যায়ে এসে লেখক নিজেও তার বিস্ময় ও ঘোরের কথা উল্লেখ করেছেন এবং পাঠককুলও হয়ত আবেগতাড়িত হতে পারেন।

এরপর ইস্তাম্বুলের আরও কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা পরিদর্শন করার পাশাপাশি ওই শহরের মানুষের আপ্যায়ন, আচার-ব্যবহার, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খাবারের বর্ণনা, রেস্তোরাঁর বর্ণনা, রাস্তা ও যানবাহনের বর্ণনা ঝরঝরে ভাষায় উল্লেখ করেছেন যা পাঠককের চোখ চুম্বকীয় আকর্ষণে বইয়ের পৃষ্ঠায় টেনে রাখে। কখনো মনে হবে পাঠক নিজেই তুরস্কের শহরে পরিভ্রমণ করছেন। তুরস্কের মুসলমানদের আচরণ, পোশাক, রমজান মাসেও খাবারের দোকান অবাধ খোলা থাকা, মেয়েদের প্যান্ট-শার্ট পরে নিরুদ্বেগে ঘুরে বেড়ানো, ছেলেমেয়ে প্রকাশে সিগারেট খাওয়া, রমজান মাসেও প্রকাশ্যে রাস্তায় গানের আসর বসানো বাংলাদেশ ও তুরস্কের মুসলমানদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্যের সীমারেখা বোঝা যাবে। সেখানে হিজাব ছাড়া মসজিদে মেয়েরা প্রবেশ করছে যা উল্লেখ করার মতো ঘটনা।

এই ভ্রমণকাহিনি পড়া মানেই আধুনিক তুরস্কের মানুষের যাপিত জীবনের প্রতিচ্ছবি যেন চোখে ভেসে ওঠে। বাংলাদেশে যেমন মৌলবাদের উত্থান এবং ধর্মান্ধের খড়গ চাপানো হয় তুরস্কে সেরূপ কোনো ঘটনা ঘটে না। দিন কিংবা রাতের যেকোনো সময়ে মেয়েরা ইচ্ছেমতো পোশাক পরে যেকোনো স্থানেই প্রয়োজনে যাচ্ছে। লেখক নিজেও মধ্যরাতে বের হয়েছেন কিন্তু তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো উদ্বেগ উৎকণ্ঠা নেই। মানুষ হিসেবে তাদের হৃদয়ের প্রসারতা আরও অনেক মানুষের সঙ্গে লেখকের মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। বাংলাদেশে নারীদের নিরাপত্তার জন্য যেমন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় প্রহর গুনতে হয় তুরস্কে হয়তো তা দুঃস্বপ্নেও মেলে না।

এই ভ্রমণকাহিনিতে যেসব স্থান, নদী ও স্থাপনার উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো— বসফরাস নদী, আয়া সোফিয়া মসজিদ, সুলতান আহমেত মসজিদ, তোপকাপি প্যালেস, গালাটা টাওয়ার, ডলমাবাহচে, কাপাদোকিয়া গুহা, গোরেম শহর, গোরেম শহরে নীল বেলুনের উড্ডয়ন, ডেরিনক্যুয়ু আন্ডারগ্রাউন্ড সিটি, প্রাচীন জনপদ আনতালাইয়া, ভূমধ্যসাগর, অলিম্পাস সমুদ্র সৈকত, রোমান অ্যাম্ফিথিয়েটার, মওলানা জালাল উদ্দিন রুমির সমাধিসৌধ, ফেথিয়ে শহর, ওলুদেনিয সমুদ্রসৈকত, ফেথিয়ে ফিস মার্কেট, ফেথিয়ে সমুদ্রবন্দর, প্রাচীন নগর কায়াকোয়, সেলজুক, এফেসাস নগরী, ট্রয় নগরী ও কেলাম আতাতুর্কের সমাধিসৌধ ইত্যাদি। এসব স্থান ও স্থাপনায় পরিভ্রমণের সময় লেখকের সঙ্গে সেখানকার স্থানীয় মানুষজন ও বিভিন্ন দেশের ভ্রমণপিয়াসী পর্যটকদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার বর্ণনা, হরেক রকম লোভনীয় খাবারের ছবিসহ স্বাদ ও রেসিপি, অ্যান্টিক, অলংলকারাদি এমনকি মসলাপাতির বর্ণনাও এতে উৎকীর্ণ হয়েছে।

ফাতিমা জাহান একজন মেধাবী এবং নানা বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা ও জানাশোনা আছে তা এই ভ্রমণকাহিনি পড়ার সময় পাঠকের কাছে উপলব্ধ হয়। বইটির কোনো কোনো পৃষ্ঠার কাব্যিক বর্ণনা পাঠককে বিমোহিত করে। তিনি একা একা আঠারো বছর বয়স থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করছেন এবং ভ্রমণই তার নেশা। ভূমিকায় তিনি লিখেছেন, “প্রত্যেক মানুষ আসলে একা, কেউ নিজ মনে বা কেউ জনারণ্যে। একা না হলে বিশ্বচরাচরের স্বকীয়তা অনুধাবিত হয় না।” মানুষের পূর্ণতা কোথায়? মানুষের সাফল্য কোথায়? এ-রকম প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগ্রত হয়। তখন মানুষ পথের সন্ধান করে। গন্তব্যের সন্ধান করে।

এই বইয়ে যখন লেখক বিভিন্ন সমাধির বর্ণনা দিয়েছেন তখন পাঠক হিসেবে আমার কাছে মনে হয়েছে এই রবিন শর্মা রচিত ‘দ্য মঙ্ক হু সোল্ড হিজ ফেরারি’ উপন্যাসে বর্ণিত হিমালয়ের পাদদেশের সন্ন্যাসীরা অনাগত ভবিষ্যৎ ও সত্যের সন্ধানে প্রত্যুষের আলো ফোটার আগে ফিকে অন্ধকারে প্রশান্তি ও স্নিগ্ধতার আবহে সারি সারি অরণ্যের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। আবার যখন তিনি পূর্ণতা বা গন্তব্যের কথা বলছেন তখন এই আলোচকের মনের আকুতির সঙ্গে যেন কোথাও এক অদৃশ্য মেলবন্ধন ও সাজুয্যের রশিতে টান লাগে। এই লেখকের একটি গানে পথ, গন্তব্য ও পূর্ণতার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পায়, “কোথায় আমার সাকিন ও গো কোন সাকিনে ঘর…”। ভূমিকার পাতায় লেখকের বর্ণনায়, “মানুষ হিসেবে পূর্ণতা পেতে হলে, মানুষকে বুঝতে হলে, অজানাকে জানতে হলে কাঁধে ঝোলা নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হয় মাঝে মাঝে। আর ভ্রমণ এমন এক তরিকা যার মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায়। জানা যায় নিজেকে আরও গভীরে। জ্ঞানের আরেক ধাপ উপরে নিজেকে আবিষ্কার করা যায়।”

এই বইয়ের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় দিকটি হল প্রতিটি স্থানে ভ্রমণের বর্ণনার পর মওলানা জালাল উদ্দিন রুমির কবিতার চরণ যা পাঠকের আনন্দ ও চিন্তার খোরাক জোগায়। যেমন—

‘পথটা তোমার আর তুমি একা।
অন্যরা হয়ত তোমার সাথে সাথে চলবে
কিন্তু কেউ তোমার হয়ে পথ পাড়ি দেবে না।’
‘ভালোবাসা কোনো আবেগের নাম নয়
ভালোবাসাই তোমার অস্তিত্ব।’
‘নিজেকে একা ভেবো না
সমস্ত বিশ্ব তোমার মাঝে বাস করে।’

আলোচকের মতামত : তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশকে তুলনা করলে দেখা যাবে তাদের সঙ্গে তুলনা করার মতো আমাদের কিছুই নেই। সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়ার মতো কিছুই চোখে পড়ে না। না তাদের কৃষ্টি-কালচার, ইতিহাস-ঐতিহ্য, না অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়াদি, শিক্ষা-দীক্ষা-মানবিকতা, বিজ্ঞানমনস্কতা, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি কোনোটাই তাদের সঙ্গে তুল্য নয়। তুরস্কের মানুষ যেখানে ধর্মকে উদারতার সঙ্গে গ্রহণ করেছে আমরা সেখানে ধর্মান্ধতার অন্ধকারে ক্রমাগত নিমজ্জিত হচ্ছি। দুটি মুসলমান দেশের মধ্যে কোনো সাদৃশ্যই না থাকলে কেমন দেখায়। অন্তত একটি পাওয়া গেছে সেটি হল তুরস্কেও জুম্মার দিন নামাজের পর মসজিদের পাশে অস্থায়ী বাজার বসে এবং বাংলাদেশেও একই রকম বাজার-সংস্কৃতি এক দশকের মধ্যে বেশ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই ভ্রমণকাহিনির মধ্যে লেখক যেমন অপরিসীম আনন্দে ভেসে বেড়িয়েছেন এবং পাঠককেও অনুরূপ রসদ জোগান দিয়েছেন ঠিক তার একটি বৈপরিত্যও লক্ষ করা যায় যেখানে লেখকের কিঞ্চিৎ হতাশা ব্যক্ত হয়েছে। হতাশা সংক্রামক, তাই লেখকের হতাশা থেকে পাঠকও সংক্রমিত হয়েছে। সেটি হল, নোবেল বিজয়ী ওরহাম পামুকের কোনো বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ পাননি লেখক। এটুকু হলেও মনে কষ্ট হত। ওরহাম পামুকের বই সেখানকার পাঠককে টানে না এ-কথা কীভাবে মেনে নিই?

এবার শেষ করার পালা। বইয়ের আঙ্গিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে দুটি কথা না বললে অন্যায় হবে। ১৫২ পৃষ্ঠার চার রঙার বইটি ১২০ গ্রাম অফসেটে পেপারে ১৫০ গ্রাম বোর্ড বাইন্ডিং ও ঝকঝকে ছাপা। বলতে গেলে নির্ভুল বানানের দাবি রাখে। মোট ৮৫টি চার রঙের ছবি বইটিকে করে তোলেছে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দিত। বইটির মূল্য ৪৭৫ টাকা। চার রঙের বইয়ের জন্য এটি উচ্চ মূল্য বলা যাবে না।

 

+ posts

Read Previous

একজন মন্ত্রীর একদিন

Read Next

শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল, অনুপ্রাণন- ৩য় সংখ্যা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *