গত ১লা এপ্রিল জাতীয় জাদুঘরের ‘কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে’ অনুষ্ঠিত হলো ‘জিগীষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের’ ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। অনুষ্ঠানে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অনন্যসাধারণ অবদানের জন্য সম্মাননা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. অতিউর রহমান। বিশেষ অতিথি- কথাসাহিত্যিক দিলারা মেসবাহ ও দৈনিক ঢাকার ডাক-এর সম্পাদক এবিএম সামসুর হাসান।
সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদানের জন্য ভ্রমণ গদ্যে মাহফুজুর রহমান, গল্পে অনামিকা হক লিলি, প্রবন্ধে সরকার আব্দুল মান্নান, ছোটোগল্পে কানিজ পারিজাত এবং কবিতায় শামসুল বারী উৎপলকে সম্মাননা জানানো হয়।
প্রধান অতিথি ড. আতিউর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলা সাহিত্য এবং বাঙালি হিসেবে আমরা যে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি তার পেছনে আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের অসংখ্য ত্যাগের ফসল।
জিগীষার সভাপতি ইলিয়াস ফারুকীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সাধারণ সম্পাদক মনিরা আক্তার অতিথিদের উত্তরীয় পড়িয়ে বরণ করে নেন এবং সংগঠনের গত এক বছরের বার্ষিক রির্পোট পড়ে শোনান। অনুষ্ঠানে কোলকাতা থেকে আগত দুজন অতিথিকেও সম্মাননা জানানো হয়। উল্লেখ্য, ‘জিগীষা সাহিত্য ও সংস্কৃতিক পরিষদ’ বিগত কয়েক বছর ধরেই সাহিত্যের অঙ্গনে অবদান রাখার জন্য বিশিষ্ট জনদের সম্মাননা প্রদান করে আসছে।
জয় করবার ইচ্ছা থেকেই জিগীষার জন্ম বা আত্মপ্রকাশ। জিগীষা একটি অ-রাজনৈতিক, অ-সাম্প্রদায়িক ও লিঙ্গ বৈষম্যহীন সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার প্রতিষ্ঠান।
১লা মার্চ ২০১৭ খ্রি. জিগীষা থেকে প্রকাশিত ‘বৈঠা’র প্রথম প্রকাশনা অনুষ্ঠান জিগীষার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া জিগীষার পক্ষ থেকে নতুন প্রজন্মকে সাহিত্যচর্চায় আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে ‘এসো সাহিত্যের আসরে’ নামে স্কুলভিত্তিক গল্প পড়ার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই উপহার দেওয়া হয়। প্রতি তিন মাস অন্তর লেখক পাঠক আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়। করোনার ঐ দুঃসহ সময়েও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই আড্ডা অব্যাহত থাকে। এই সময় আড্ডার প্রসার বেড়ে বন্ধু প্রতিম রাষ্ট্র ভারতের প্শ্চিম বাংলার অনেক কবি-সাহিত্যিকদের সাথে আন্তরিক সাংগঠনিক যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
২০১৯, ১লা ফেব্রুয়ারি ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী থেকে শুরু হয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গুনীজনদের জিগীষার পক্ষ থেকে সম্মাননা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান। ২০১৯ সালে সম্মাননা জানানো হয় ভাষা সৈনিক ড. জসিমউদ্দিন আহমেদ, কবি ইন্দু সাহা, প্রবাসী কথাসাহিত্যিক তারেক হক, মাহাবুবা হেসাইন এবং জিগীষার সদস্য হুমায়ন কবিরকে।
২০২০ সালের সম্মাননা প্রদান করা হয় ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক, দিলারা মেসবাহ, অরুণ কুমার বিশ্বাস, মোখলেসুর রহমান মুকুল এবং জিগীষার সদস্য প্রণব মজুমদারকে।
২০২১ সালের সম্মাননা প্রদান করা হয় সরকার আব্দুল মান্নান, অনামিকা হক লিলি, মাহফুজুর রহমান, কানিজ পারিজাত এবং জিগীষার সদস্য শামসুল বারী উৎপলকে।
জিগীষা প্রত্যাশা করে যে, মুক্তমনের সৃজনশীল চিন্তার মানুষেরা জিগীষার পাশে থাকবেন।