অনুপ্রাণন, শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল এ আপনাকে স্বাগতম!
এপ্রিল ২৭, ২০২৪
১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এপ্রিল ২৭, ২০২৪
১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নুসরাত সুলতানা -
ইনকিউবেটর

সেদিন এপোলো হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দুহাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠেছিল লিজা। পাশেই এক রাজ্য হতাশা আর বিষাদ নিয়ে মিতুলের দিকে তাকিয়ে আছে লিজার স্বামী আরিফ চৌধুরী। সাত বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তান ছিল না। এই ডাক্তার, সেই ডাক্তার করে করে সাত বছর কেটে গেছে। অবশেষে ডাক্তার টি. এ. চৌধুরীর চিকিৎসায় আল্লাহর রহমতে লিজা গর্ভধারণ করে। কিন্তু গর্ভকালীন জটিলতায় স্ত্রীকে সময় দিতে গিয়ে আমদানি-রফতানির ব্যবসা প্রায় লাটে উঠেছে আরিফের। সারাক্ষণই যত্ন-আত্তি করতে হয়েছে স্ত্রীকে। লিজা বেডরেস্টে ছিল প্রায় শেষ অবধি। শ্বশুরবাড়ি কিংবা নিজের পরিবার কেউই একটানা সাহায্য করতে পারেনি। সবকিছু খুশিমনে মেনে নিয়েছিল আরিফ যখন শুনেছিল জময মেয়ে হবে। কারণ মেয়ে তার খুউব পছন্দ। একটাও যদি বাচ্চা হয় আরিফ মেয়েই চেয়েছিল।

১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে লিজার বাচ্চা প্রসব করার কথা ছিল। লিজা আর আরিফও সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। নতুন অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতে তারা সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করছিল একটু একটু করে। তাদের জীবন পেয়ালাটা যেন আনন্দরসে কানায় কানায় ভরে উঠছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো যখন ডাক্তার মরিয়ম ফারুকী বললেন যে, দুই বাচ্চার বৃদ্ধির হার আশঙ্কাজনক। দ্রুত সিজার করে বের করতে হবে, নইলে বাঁচানো যাবে না। ১৭ অক্টোবর নির্দিষ্ট সময়ের বারো সপ্তাহ আগে সিজার করা হয় লিজাকে।

জ্যাম, কালো ধোয়া আর ইট কাঠের শহরে জীবনযুদ্ধে যোগ দেয় আরও দুটি যমজ প্রাণ মিতুল ও টুটুল। দুজনের ওজনই খুব কম। একেবারে শীর্ণকায় দুটি বাচ্চা। মিতুলের ওজন ৯৯৫ গ্রাম আর টুটুলের ওজন ৯০৭ গ্রাম। মিতুল, টুটুলের চেয়ে বারো মিনিটের বড়।

মেয়েদের জন্মের পর আরিফ চৌধুরী টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম আনিয়েছে চার মণ। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের সবাইকে মিষ্টি বিতরণ করেছে আরিফ। লিজা স্বামীকে বলেছে দুটি খাসি জবাই করে যেন এতিমখানার বাচ্চাদের খাইয়ে দেয়।

মিতুল আর টুটুলকে রাখা হয়েছে হাসপাতালের নিউনাটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ইনকিউবেটরে। ডাক্তারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এক সপ্তাহ হাসপাতালে থেকে লিজা বাসায় চলে যায়। প্রতিদিন একবার হাসপাতালে এসে মেয়েদের ব্রেস্ট ফিড করিয়ে যাবে আর অন্য দুটি ফিডারে দুধ গলিয়ে রেখে যাবে এমনই পরামর্শ দিয়েছে ডাক্তার।

ইনকিউবেটরের ভেতরে দ্রুত বাড়তে শুরু করেছিল টুটুলের ওজন। কিন্তু অন্য ইনকিউবেটরে থাকা মিতুল ক্রমশ হারিয়ে ফেলছিল তার জীবনীশক্তি। শুরু হয়েছিল শ্বাসকষ্ট। ঠাণ্ডা ও নীল হয়ে আসছিল মিতুলের কোয়েল পাখির মতো ছোট্ট শরীর। একই সঙ্গে দেখা দিয়েছিল হৃদপিণ্ডের সমস্যা। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ওজন বৃদ্ধি পাওয়া। অক্সিজেন দেওয়া সত্ত্বেও মিতুলের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমতে থাকে। মিতুলের বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। অন্যদিকে নিজের ইনকিউবেটরে হাত পা ছুড়ছিল মিতুলের সুস্থ সবল বোন টুটুল।

মিতুলের শারীরিক অবস্থার চুড়ান্ত অবনতি ঘটেছিল নভেম্বরের ১২ তারিখে। একটু বাতাসের জন্য লড়াই করছিল মিতুল। তার মুখ, সরু সরু হাত পা কালচে নীল হতে শুরু করেছিল। হার্টবিট ভয়ঙ্কর কমে গিয়েছিল। হেঁচকি তুলতে শুরু করেছিল মিতুল। হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে স্বামীকে নিয়ে ছুটে এসেছিল, সদ্য ঘরে ফেরা লিজা চৌধুরী। মিতুলের জীবন প্রদীপ নিভে আসছে জেনে হাতের পাতায় মুখ ঢেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল তারা। আর মনে-প্রাণে কায়মনোবাক্যে আল্লাহকে বলছিল, হে আল্লাহ তুমি মিরাকল ঘটিয়ে মিতুলকে সুস্থ করে দাও। আমি গরু কেটে এতিম বাচ্চাদের খাওয়াব। শুধু তোমার সন্তুষ্টির জন্য দশটা রোজা রাখব।

মিতুলের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিল হাসপাতালের অভিজ্ঞ নার্স ফারহানা মিথিলা। সিস্টার মিথিলা দিনরাত এক করে মিতুলকে বাঁচানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। প্রচলিত সমস্ত চিকিৎসা পদ্ধতি দিয়ে মিতুলের জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছিল চিকিৎসকেরাও। তবুও মিতুল কিছুতেই শ্বাস নিতে পারছিল না। হার্টবিট ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছিল।

হঠাৎ সিস্টার মিথিলার মনে পড়ে গিয়েছিল, বয়স্কা সিস্টার রুবিনার বহুদিন আগে বলা ‘ডাবল-বেডিং’-এর কথা। রুবিনা বেলজিয়ামে গিয়েছিল ট্রেনিংয়ে। সেখানেই সে ডাবল বেডিং ব্যবস্থা দেখে এসেছে। সদ্যোজাত বা সময়ের অনেক আগে জন্ম নেওয়া অপুষ্ট যমজ শিশুদের একই ইনকিউবেটরে রাখার একটি পদ্ধতি হল ‘ডাবল-বেডিং’। যেটি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত হলেও, অদ্যাবধি বাংলাদেশে এই পদ্ধতির প্রচলন নেই।

এপোলো হাসপাতালের চিফ নার্স সোমা নাহিদ সেই সময় একটি কনফারেন্সে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকেরাও তখন ওয়ার্ডে ছিলেন না। শিশুটির জীবন বাঁচানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে এক অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিস্টার মিথিলা। প্রথা ভাঙার জন্য চাকরি চলে যেতে পারে জেনেও ইনকিউবেটর থেকে বের করে নিয়েছিল মরতে বসা মিতুলকে।

আরিফ দম্পতিকে বলেছিল, ‘আমাকে একবার শেষ চেষ্টা করতে দিন, আমি মিতুলকে তার বোনের পাশে রাখতে চাই।’ সিস্টার মিথিলার কোলে থাকা মিতুলের শরীরে খিঁচুনি এসে গিয়েছিল। মিতুলের বাবা-মা বুঝতে পারছিল আর হয়তো কয়েক মিনিট, তারপর ছোট্ট মিতুলের সব লড়াই শেষ হয়ে যাবে। বিধ্বস্ত আরিফ দম্পতি সম্মতি জানিয়েছিল মাথা নেড়ে।

সিস্টার মিথিলা দ্রুত বোন টুটুলের ইনকিউবেটরের ঢাকনা খুলে টুটুলের বিছানায় শুইয়ে দিয়েছিল মিতুলকে। ১৭ অক্টোবর জন্ম নেওয়ার ২৭ দিন পর দুই বোন কাছাকাছি এসেছিল। ঠিক তখনই ঘটে গিয়েছিল মহাকালের অন্যতম সেরা ‘মিরাকল’। অবাক চোখে সিস্টার মিথিলা ও আরিফ দম্পতি দেখেছিলেন, ইনকিউবেটরের ঢাকনা বন্ধ করার আগেই মিতুল গড়িয়ে বোনের গা ঘেঁষে গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়েছিল। বোনের গায়ে গা ঠেকিয়ে শোয়ামাত্রই মিতুলের খিঁচুনি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যে বেড়ে গিয়েছিল মিতুলের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা। যা জন্মের পর থেকে মিতুলের শরীরে দেখা যায়নি।

টুটুল অঘোরে ঘুমাচ্ছিল। বোন আসার পর নিজে থেকেই হঠাৎ সে জেগে উঠেছিল। সবাইকে অবাক করে টুটুল তার ছোট্ট বাম হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরেছিল মৃতপ্রায় বোনকে। চোখে জল এসে গিয়েছিল সিস্টার মিথিলারও। বোনের আলিঙ্গনে ক্রমশ জীবনে ফিরে আসছিল টুটুলের। বাড়তে শুরু করেছিল শরীরের উষ্ণতা। জন্মের পর সেই প্রথম ঠিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে শুরু করেছিল মিতুল। ত্বকের রঙ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল। সেই সময়ে হাসপাতালের ছবি তুলতে এসেছিলেন এক চিত্র-সাংবাদিক। নিওনাটাল বিভাগে ‘মিরাকল’ ঘটেছে, খবরটি পেয়ে ছুটে এসেছিলেন ক্যামেরা নিয়ে। তুলে নিয়েছিলেন ঐতিহাসিক দৃশ্যটি।

কাকতালীয়ভাবে সেদিন চিফ নার্স সোমা নাহিদ, কনফারেন্সে যমজ অপুষ্ট শিশুদের ‘ডাবল-বেডিং’ নিয়ে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘ডাবল-বেডিং’পদ্ধতির প্রচলন হওয়া উচিত বাংলাদেশে। তিনি জানতেনও না তাঁর হাসপাতালেই ‘ডাবল-বেডিং’ মিরাকল ঘটিয়ে দিয়েছে। হাসপাতালে ফিরে খবরটি পেয়ে আনন্দে প্রায় চিৎকার করে উঠেছিলেন সোমা। কনফারেন্সে যাওয়ার সময় নিশ্চিত ছিলেন, ফিরে এসে শুনবেন মিতুল নেই! দুঃসাহসী ও বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য জড়িয়ে ধরেছিলেন সিস্টার মিথিলাকে।

বোনের কাছে দেওয়ার পর, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিল মিতুল। দ্রুত বাড়ছিল ওজন, পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল মিতুলের দুষ্টুমি। সারাক্ষণ দুই বোনে খুনশুটি করত ইনকিউবেটরে। দুজনের মুখেই ফুটে উঠত স্বর্গীয় হাসি। মনে হতো দুটি প্রস্ফুটিত গোলাপ বাতাসে দোল খেয়ে একে অপরের গায়ে ঢলে পড়ছে। এই ভালোবাসার উষ্ণ আনন্দের রেশ ছড়িয়ে পড়েছিল সারা হাসপাতালে। কয়েক মাস পরে, হাসপাতাল থেকে বাবা মায়ের সঙ্গে বাড়ি গিয়েছিল দুই বোন। সিস্টার মিথিলার নির্দেশে বাড়িতেও মিতুল আর টুটুলকে রাখা হতো এক বিছানায় পাশাপাশি।

চিত্র-সাংবাদিকের তোলা ‘The Rescue Hug’ ছবিটি ছাপা হয়েছিল বিশ্বের প্রায় সবকটি বড় সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিনে।

লিজা একেকদিন একেকজনকে পাশে নিয়ে ঘুমাত। কখনো মিতুল আর কখনো টুটুল। কিন্তু প্রায় রাতেই ঘুম ভেঙে লিজা আর আরিফ দেখত টুটুল মিতুলকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাছে। আর দুজনের মুখেই ফুটে উঠছে মিষ্টি পবিত্র হাসি। যতবার এই দৃশ্য আরিফ দেখত ততবার লিজাকে বুকের সাথে চেপে ধরে বলত, বউ তোমাকে এক রাজ্য ভালোবাসা। তুমি আমাকে এত্ত সুন্দর দুটি মা দিয়েছ! সত্যি আমি খুব সুখী। লিজার চোখে প্রতিবার পানি চলে আসত।

দুই বোনকে একই রকম জামা, জুতা সব পরাত লিজা। ওদের প্রতিবেশীরাও প্রায়দিন এসে দেখে যেত দুই বোনকে। টুটুলের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হচ্ছিল আর মিতুলের বৃদ্ধি একটু ধীরে। টুটুল হাঁটতে শুরু করে এক বছরে। আর মিতুলের লেগে যায় ষোল মাস। কিন্তু টুটুল যেন সবসময়ই বোনের খেয়াল রাখে। দুই বছর বয়স থেকে টুটুল মিতুলকে দিদু ডাকে আর মিতুল বোনকে ডাকে বাবু। দুই বোন সবকিছু স্বেচ্ছায় ভাগাভাগি করে নেয়, চকলেট, খেলনা সবকিছু। সবার চোখের প্রশান্তি হয়ে বেড়ে উঠতে থাকে ওরা। দেখতে দেখতে দুই বোনের চার বছর বয়স হয়ে যায়।

দুই বোনকে ভর্তি করে দেয় রোজ ভ্যালি কিন্ডারগার্টেনে। টুটুল কুইক লার্নার আর খুব মিশুক কিন্তু মিতুলের শিখতে একটু সময় লাগে। ক্লাসে দুজন সবসময়ই একসাথে বসে। টুটুল প্রশ্ন করে শিক্ষকদের মন কেড়ে নেয় আর মিতুল চুপচাপ থাকে। টুটুল ক্লাসের ফাঁকে বন্ধুদের সাথে খেলতে যায় আর মিতুল ক্লাসেই বসে থাকে। দৌড়ে এসে আবার দিদুকে বলে যায়, দিদু তুই টিফিন খেয়ে নে। কেউ যদি মিতুলকে কিছু বলে তাকে কিল-থাপ্পড় কষে দেয় টুটুল। একদিন এসে দেখে জেসিকা মিতুলের টিফিন খেয়ে ফেলেছে আর মিতুল কাঁদছে টুটুলকে গিয়ে খবর দেয় বুবলি। টুটুল এসে আচ্ছা করে মার দেয় জেসিকাকে আর বলে কোনোদিন যদি দিদুকে আর ডিস্টার্ব করিস তোর একদিন কী আমার একদিন!

হঠাৎ করে টাইফয়েড আক্রান্ত হয় টুটুল। ভর্তি হয় ইউনাইটেড হাসপাতালে। তিনদিন টুটুলের বারবি ডল হাতে নিয়ে বাবু, বাবু বলে বিরামহীন চিৎকার করেছে মিতুল। কিছুই খাওয়াতে পারেনি মিতুলকে। চিপস, চকলেট খুব পছন্দ মিতুলের কিন্তু তাও খাওয়ানো যায়নি। তিনদিনের মাথায় মিতুলকেও ভর্তি করাতে হয় ইউনাইটেড হাসপাতালে। আর দুইবোনকে রাখা হয় একই বিছানায়। এবারও মিতুল সাথে সাথেই খাওয়াদাওয়া শুরু করে। হাসতে শুরু করে টুটুলও।

দুই বোনের জন্যই কেনা হয় স্কলাস্টিকার ভর্তি ফর্ম। চান্স পেয়ে যায় টুটুল কিন্তু মিতুল চান্স পায় না। স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করে আরিফ চৌধুরী। বলে যে, দুই বোনকে আলাদা করলে আমার মিতুলের লেখাপড়া হবে না। আমি প্রয়োজনে মোটা অঙ্কের টাকা ডোনেশন দেব স্কুলকে। কিন্তু স্কলাসটিকা কিছুতেই একটু স্লো বাচ্চাকে নিতে চায় না। মিতুলকে দেওয়া হল বিআইএস স্কুলে। পরিণাম খুব খারাপ হতে শুরু করল।

মিতুল একেবারেই লেখাপড়া করে না। টিফিন খায় না, ক্লাসের কোনো পড়া সি ডাব্লুতে উঠায় না। শুকিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর টুটুলের রেজাল্ট ও খারাপ হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আরিফ চৌধুরী দুই বোনকে নিয়ে যান চাইল্ড সাইক্লোজিস্টের কাছে। জন্মের পর থেকে এ অব্ধি সমস্ত ইতিহাস শুনে সাইক্লোজিস্ট মিতুল আর টুটুলকে আঠারো বছর বয়স অব্ধি একই সাথে রাখতে পরামর্শ দেন। সাইক্লোজিস্ট সেদিন বলেন, দে আর টু বডিস উইথ সেইম সোল। ইনফ্যাক্ট দে আর সোলমেট!

ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক দুই বোনকেই ভর্তি করে দেওয়া হয় বিআইএস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। দুজনেই তরতর করে লেখাপড়ায় এগিয়ে যায়।

একটু পরিণত বয়স থেকেই টুটুল জিন্স, টিশার্ট এসব পরে, চোখে রিমলেস গ্লাস পরে, আর চুল বয়কাট করে রাখে। মিতুল পরে লং ফ্রক, লং স্কার্ট, কখনো শাড়ি ইত্যাদি।

দুইবোন যখন হেঁটে যায় তখন অপরিচিত মানুষের মনে হয় প্রেমিক প্রেমিকা যাচ্ছে। কারণ মিতুল টূটুলের হাতের ভেতর হাত গুঁজে দিয়ে হাঁটে।

ইন্টারমিডিয়েট পাস করে মিতুল ইংরেজি সাহিত্যে ভর্তি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর টুটুল আর্কিটেকচার বিভাগে ভর্তি হয় বুয়েটে। এখনো চলে ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে দুই বোনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর বুয়েট ক্যম্পাসে আসা যাওয়া।

আলভী বেশ কিছুদিন থেকেই খুব খেয়াল করে মিতুলের চলাফেরা, সুন্দর মিষ্টি হাসি সবকিছু। একদিন সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে পড়ছিল মিতুল এগিয়ে এসে পরিচিত হয় আলভী। বলে, আমি আলভী ইকোনোমিকস তৃতীয় বর্ষ। আপনার সাথে পরিচিত হতে পারি?

মিতুল হেসে বলে, আমি মিতুল, ইংরেজি সাহিত্য দ্বিতীয় বর্ষ। সেই থেকে মাঝে মাঝেই মিতুলের সাথে দেখা করে আলভী। একদিন আলভী মিতুলকে খুঁজছে লাইব্রেরি, মধুর ক্যান্টিন, কলাভবনের বটতলা সবজায়গায়, মোবাইল ফোন নাম্বারটা লজ্জায় তখনও চেয়ে উঠতে পারেনি। এমনসময় আলভী দেখতে পায় মিতুল চোখে রিমলেস চশমা, কালো জিন্স আর ব্লু টি শার্ট পরা একটা ছেলের সাথে রিকশা থেকে নামছে।

এই দৃশ্য দেখে আলভী গম্ভীর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এমন সময় আলভীকে দেখতে পায় মিতুল। হাসি দিয়ে সামনে গিয়ে বলে, আলভী ভাই, পরিচিত হন, আমার বোন।

আলভী বলে— তোমার বোন! বাবাহ! বাঁচালে। আমি তো ভাবলাম এই মাস্তান আবার তোমার বয়ফ্রেন্ড নাকি! মিতুল চোখ নীচু করে মিটমিট করে হাসে।

টুটুল বলে, হ্যাঁ আমিই দিদুর আসল বয়ফ্রেন্ড। কেউ আমার দিদুকে কষ্ট দিলে তার ঠ্যাং ভেঙে ফেলব!

আলভী বলে, এই টুটুল মাস্তানের বোনকে কষ্ট দেওয়ার কলিজা কারও আছে নাকি! এরপর তিনজন প্রায়ই দুপুরে বুয়েট ক্যান্টিন, নীরব হোটেল, ধানমন্ডির হাড্ডি বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় দুপুরের খাবার খায়। ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন স্থানে। মুভি দেখে মাঝে মাঝে। বাসায় ফিরতে দেরি হলে আলভী দুই বোনকে পৌঁছে দিয়ে আসে। আলভী একদিন টুটুলকেই বলে, গুরু মিতুলকে বল না এই অভাগাকে একটু তাকিয়ে দেখতে!

টুটুল বলে, ক্যান সাহস নাই? কেমন পুরুষ আপনি?

আলভী বলে, সামনে গেলেই হার্টবিট বেড়ে যায়! আর রিফিউজ করলে আমি শেষ! একটু দেখো না গুরু ব্যাপারটা! সেদিন বাসায় গিয়ে দুই বোন এই নিয়ে খুব হাসাহাসি করে। টুটুল বলে, দিদু তোর বর হিসেবে এই বুদ্ধুটা খুব খারাপ হবে না! বেশ ভদ্র, পড়ালেখায় তো বেশ ভালো। আর তোকে যে কী পরিমাণ পছন্দ করে!

মিতুল কিছু বলে না শুধু হাসে।

একদিন আলভী সাথে করে নিয়ে আসে তার কাজিন রাজনকে। মিতুলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় রাজনকে। আলভী বলে— চল, তিনজন মিলে বুয়েটে যাই।

গিয়ে টুটুল মাস্তানকে সারপ্রাইজ দেই। বুয়েট ক্যম্পাসে গিয়ে দেখে টুটুল বন্ধুদের সাথে গিটার বাজিয়ে গান গাইছে, ‘তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা, মন জানো না’। মিতুলকে দেখে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে চুমু দিয়ে বলে— আয় দিদু, তোকে গান গেয়ে শোনাই।

আলভী বলে, আর আমরা যে দুই ভাই আছি। আমরা কি মানুষ নই? খালি দিদু গান শুনবে?

টুটুল হাসতে হাসতে বলে, আসো না চ্যাম্প সবাই শুনবে। তুমি জানো আলভী ভাই, দিদু কিন্তু চমৎকার ক্লাসিক নাচ জানে। মিতুল চোখ গরম করে, বলে চুপ কর তো বাবু!

টুটুল বলে, ওক্কে গুরু। আলভী বলে টুটুল ও আমার ভাই রাজন কানাডা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছে তৃতীয় বর্ষে। আমরা প্রায় সেইম এইজ, রাজন আমার চেয়ে ছয় মাসের ছোট।

তিনজনে গান শুনে খেতে যায় ধানমন্ডি কড়াই গোস্ত রেঁস্তোরায়। রিকশায় উঠে রাজন টুটুলকে জিজ্ঞেস করে, একটা কথা সরাসরি জানতে পারি? তুমি হ্যাঁ বা না বললেই হবে।

টুটুল হেসে বলে, মে বি আই গেইস। আচ্ছা বল, শুনি।

রাজন জিজ্ঞেস করে, ডু ইউ হ্যাভ এনি এফেয়ার? আই মিন বয়ফ্রেন্ড?

টুটুল বলে, নট ইয়েট। রাজন প্রশান্তির হাসি দেয়। আর মনে মনে বলে, লেটস ট্রাই! খাওয়াদাওয়ার ফাঁকেই একটা কাগজে নিজের মোবাইল নাম্বার লিখে দিয়েছে টুটুলকে। আর একটু নিচে লিখে দিয়েছে, ঠিক রাত দশটায় তোমার ফোনের অপেক্ষায় থাকবে এই নাম্বারটি।

টুটুল ইচ্ছে করে ফোন দেয় রাত সাড়ে এগারোটায়। রাজন বলে, এই দেড় ঘণ্টা আমার কেমন কেটেছে সেটা জানো তুমি?

টুটুল হাসতে হাসতে বলে, নিশ্চয়ই তোমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল! দেড় ঘণ্টা বেঁচে ছিলে না! তারপর দুজনেই হো হো করে হাসিতে ফেটে পড়ে। কথা বলার এক ফাঁকে রাজন জিজ্ঞেস করে আমি কি আগামীকাল তোমার ক্যাম্পাসে আসতে পারি?

টুটুল বলে, হ্যাঁ আসো না! মাঝে মাঝেই টুটুল আর রাজনের দেখা হয়। রাজন টুটুলকে বলেছে আমি তোমার জন্য আমার ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন জার্নাল কপি স্ক্যান করে পাঠাব। আর কিছু ই-বুকের লিঙ্ক দেব। টুটুল মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, আচ্ছা। রাজন কানাডা থেকে নিয়ে আসা দুটি টি শার্ট, কানের দুল এগুলো গিফট করে টুটুলকে।

রাজনের যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে। রাজন একদিন টুটুলকে বলে, কমরেড তোমাকে শাড়ি পরা কল্পনা করতে পারি না কিছুতেই! একদিন শাড়ি পরে আসবে? ব্রিটিশ কাউন্সিলে মুভি দেখব।

পরেরদিন টুটুল মিতুলকে বলে, দিদু আমাকে একটু শাড়ি পরিয়ে দিবি? আমরা কয়েক বান্ধবী আজ শাড়ি পরব। মিতুল বোনের গাল টিপে বলে, বাবুউ সত্যি বল!

টুটুল লজ্জা পেয়ে চোখ নিচু করে দিদুর বুকে লুকায়।

ব্রিটিশ কাউন্সিলে মুভি দেখে রিকশায় করে ব্লু মুন চাইনিজ রেঁস্তোরায় যেতে যেতে রাজন টুটুলের হাত ধরে বলে, কমরেড এই হাতটা কি সারাজীবনের জন্য আমাকে ধরতে দেবে?

টুটুল বলে, আমি এই প্রশ্নের উত্তর রেঁস্তোরায় গিয়ে দিই?

রাজন বলে, হ্যাঁ নিশ্চয়ই। দুয়েকদিন সময়ও নিতে পারো।

রেঁস্তোরায় গিয়ে বসে টুটুল ওর ফেসবুক আইডি খুলে rescue hug ছবিটি দেখিয়ে রাজনকে সেদিন হাসপাতালের নিউনাটাল ইউনিটের ঘটনা সবিস্তারে বলে। তারপর বলে, রাজন আমি আমার জীবনের কোনো পরিকল্পনা দিদুর থেকে দূরে গিয়ে করতে পারব না। আমি অনেক দূরে গেলে আমার দিদু বাঁচবে না। রাজন দেখতে পায় টুটুলের চোখে মুক্তোর মতো চিকচিক করছে অশ্রুবিন্দু। রাজন টুটুলের সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্ব, মেধা সব ছাপিয়ে টুটুলের শুদ্ধ আত্মার প্রেমে পড়ে যায়।

কিন্তু তখনই রাজন কিছু বলে না। শুধু বাসায় পৌঁছে দিয়ে যাবার সময় বলে, টুটুল আমি তোমাকে মেইল করব। মেইলের উত্তর দিও।

রাতে ফিরে টুটুল মিতুলকে বলে— দিদু, তোর বিয়ে হলে কী তুই আমাকে ভুলে যাবি!

মিতুল বলে, এই প্রশ্ন কেন বাবু? অমনি দিদুকে জড়িয়ে ধরে বলে, আমি সারাজীবন তোর কাছাকাছি থাকতে চাই।

রাত সাড়ে দশটায় রাজনের মেইল আসে। খুব মনযোগ দিয়ে পড়ে টুটুল। রাজন লিখেছে, ‘প্রিয়তমা টুটুল, আমি কানাডায় গ্রাজুয়েশন আর মাস্টার্স শেষ করে দেশেই সেটল করতে চাই। তোমার মেধা, ব্যক্তিত্ব, সহজাত সৌন্দর্য সবকিছুতে মুগ্ধ হয়েই আমি তোমাকে পাশে চেয়েছি। কিন্তু তুমি যখন দিদুর কথা বললে তখন তোমার চোখে অশ্রুবিন্দু চিকচিক করছিল। একমাত্র স্বার্থহীন শুদ্ধ আত্মাই এভাবে কাঁদতে পারে। এইরকম বিশুদ্ধ আত্মার একজন নারীর সাথে জীবন কাটাতে খুব লোভ হয়। আর কেন জানি আমার বাচ্চাদের মা তুমি ছাড়া আর কাউকেই কল্পনা করতে পারছি না!’

টুটুল মেইল নিজে পড়ে, মিতুলকে পড়তে দেয়। মিতুল বলে, ও আচ্ছা এইজন্য দিদুর বিয়ের কথা! টুটুল মিতুলের কোলে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে।

মিতুল বলে, বোকা আমাকে আলভী আগেই বলেছে যে রাজন তোকে খুব পছন্দ করে।

আলভীর বাবা খুব বড় শিল্পপতি, আর রাজনের বাবা-মা দুজনেই বড় ডাক্তার। মিতুল আর টুটুলের গ্রাজুয়েশন শেষ হলে আরিফ চৌধুরী ধুমধাম করে দুই মেয়েকে বিয়ে দেয়। প্রায় তিন হাজার মানুষ খাইয়ে হোটেল সোঁনারগাওয়ে গ্রান্ড রিসিপশন পার্টি দেয়। টুটুল পরে সী গ্রীন লেহেঙ্গা আর মিতুল পরে লাল বেনারসি শাড়ি।

বিয়ের পরেও দুই বোন সপ্তাহে অন্তত একরাত একসাথে ঘুমায় যেকোনো বাসায়। সারা সপ্তাহের গল্প করে খুনসুটি করে। মিতুলের কনসিভ হয় বিয়ের দেড় বছরের মাথায়। টুটুল ডেলিভারির এক সপ্তাহ দিদুর কাছে থাকে। রক্ত দেয়, নিবিড় পরিচর্যা করে। ছেলে হয়েছে মিতুলের।

তার এক বছর পর টুটুল কনসিভ করে। মিতুলও বোনকে পুরো সময় আসা-যাওয়া করে নিয়মিত দেখাশোনা করেছে। টুটুলেরও এক ছেলে হয়েছে। টুটুল আর রাজন একটা ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেছে নাম ‘স্বপ্নের বাড়ি’। ‘স্বপ্নের বাড়ি’ ইতিমধ্যেই বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। পরিবেশ এবং আবহাওয়া মাথায় রেখে ‘স্বপ্নের বাড়ি’ স্থাপনা ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করে।

মিতুল আর টুটুলের বয়স এখন পঁয়তাল্লিশ। প্রায়শই মিতুলের বুকে ব্যথা হয়। রাজনের বাবা বড় হার্ট বিশেষজ্ঞ। ইসিজি এবং ইকো কার্ডিওগ্রাম করে দেখতে পান যে মিতুলের প্রায় তিনটা বড় ব্লক হার্টে। রাজনের বাবা আলভীকে বলে, ওপেন হার্ট সার্জারিই ভালো হবে। আমি নিজে অপারেশন করব। আলভী বলে, আপনি করলে আমি নিশ্চিত আঙ্কেল।

খুলনাতে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। রাজনের ফার্ম কাজ পেয়েছে ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টের। ডিজাইন করেছে টুটুল আর সাইটের চিফ ইঞ্জিনিয়ার রাজন। সেই সাইট দেখতেই গিয়েছিল রাজন ও টুটুল। সাইট দেখে টুটুল রাতেই খুলনা থেকে রওনা দেয়। কারণ পরেরদিন মিতুলের ওপেন হার্ট সার্জারি। যদিও রাজনের বাবা করবে কিন্তু টুটুল ভাবে তাকে উপস্থিত থাকতে হবে। যদি দিদুর রক্ত লাগে?

মিতুলের অপারেশন করতে গিয়ে ডাক্তার দেখতে পায় অবস্থা যা ভেবেছিল তারচেয়ে জটিল। প্রায় তিন ঘণ্টা লেগে যায় অপারেশন করতে।

রাতেই গাড়ি চালিয়ে ফিরছিল টুটুল আর রাজন। ড্রাইভার বেশ সাবধানেই গাড়ি চালাচ্ছিল। হঠাৎ একটা ট্রাক অযাচিতভাবেই ধাক্কা দেয় গাড়িটা। ড্রাইভার স্পট ডেড। রাজনের এক হাত ভেঙে গেছে। আর টুটুলের মাথায় খুব চোট লাগে। রক্তক্ষরণ হয়েছে অনেক। টুটুলকে রাজনের বাবা ভর্তি করে দিয়েছে একই হাসপাতালে। সেন্স নেই টুটুলের। মিতুলেরও তখনও সেন্স ফেরেনি। আরিফ চৌধুরী আর লিজা রাজনের বাবাকে কাঁদতে কাঁদতে বলে— ভাই, ওদের একই আইসিইউতে পাশাপাশি রাখেন। নইলে আমার মেয়ে দুটো বাঁচবে না। মিতুল আর টুটুলকে আইসিইউতে শুইয়ে রাখা হয়েছে পাশাপাশি। দুজনের দুটি হাত বেঁধে দেওয়া হয়েছে একসাথে। একটু একটু করে ফিরছে প্রাণের স্পন্দন। দুজন অবচেতনেই মুঠোয় পুরে নিয়েছে দুজনের হাত। আবারও ঘটে যাবে হয়তো কোনো মিরাকল। দুজন দুজনের শরীর থেকে স্পর্শেই শুষে নিচ্ছে প্রাণসুধা। আবারও হয়তো বা হাসি-গানে মাতিয়ে তুলবে অভিন্ন আত্মার দুটি শরীর।

নুসরাত সুলতানা : কবি ও কথাকার

 

+ posts

নামঃ নুসরাত সুলতানা।
পিতাঃ শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা আবুয়াল ইসলাম খান(মৃত)
মাতাঃ শিক্ষিকা মোসাঃখালেদা বেগম(মৃত)
বর্তমান ঠিকানঃ স্বামী ও একমাত্র পুত্র সন্তান নিয়ে বর্তমানে মিরপুর সেনানিবাসে বসবাস করছেন।

পড়াশোনাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
পেশাঃ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ মিলিটারী ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি তে সিভিলিয়ান ষ্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

লেখালেখিঃ
সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক সেই ছোট বেলা থেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই লেখালেখি করতেন। মাঝখানে ছেড়ে দেন। গত ছয় বছর নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ। লেখালেখি - তাঁর আত্মার মুক্তি। গল্প, কবিতায় আঁকতে চান--

প্রেম,বিদ্রোহ, স্বপ্ন,স্মৃতি, জীবন,প্রকৃতি স..ব!!

প্রকাশিত গ্রন্থঃ

ছায়া সহিস (একক কাব্য গ্রন্থ) -২০১৯
গহিন গাঙের ঢেউ (একক কাব্য গ্রন্থ) -২০২০
পায়রার পায়ে আকাশের ঠিকানায়(পত্রকাব্য সংকলন) -২০২১
মৌতাত - (একক গল্পগ্রন্থ)  --২০২২
মহাকালের রুদ্রধ্বনি- (একক কাব্যগ্রন্থ)- ২০২২।।

এছাড়াও নিয়মিত লিখছেন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে দেশ বিদেশের বিভিন্ন লিটল ম্যাগ এবং ওয়েব ম্যাগে।

Read Previous

প্রখ্যাত তাজিক কবি লায়েক শের আলির কবিতা

Read Next

শিল্প-সাহিত্যের অন্তর্জাল, অনুপ্রাণন – ৪র্থ সংখ্যা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *